ছুলি দূর করার ঔষধ

আজকে আমরা এই প্রতিবেদনটির মাধ্যমে ছুলি রোগ সম্পর্কে জানব। ছুলি রোগ কেন হয় এবং চুলের ও কি ধরনের রোগ এগুলো সবকিছুই আমরা জানতে পারবো এই আর্টিকেলটির মাধ্যমে। ছুলি রোগ সাধারণত স্যাতসেতেস আবহাওয়া এবং অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে হয়ে থাকে। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন এবং আলো-বাতাস সম্পন্ন পরিবেশে বসবাস করলে এই ধরনের চর্মরোগ হয় না। ছুলি রোগ হলে কিভাবে এই রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে এবং এই রোগের কার্যকারী চিকিৎসা সম্পর্কে জানতে হলে আমাদের এই আর্টিকেলটি সম্পূর্ণভাবে পড়তে হবে।

ছুলি রোগ বলতে সাধারণত যা বুঝায় একধরনের চর্মরোগ যা ফ্যাকাসে লাল রংয়ের, উত্থিত, চামড়ার উপর ছোট ছোট লাল ফুঁসকুড়ির মত দেখায় । ছুলি বা আমবাত চামড়ার উপর একটি জ্বলন্ত বা যন্ত্রণাদায়ক অনুভূতির সৃষ্টি করতে পারে ।ছুলি ফাঙ্গাস বা ছত্রাক জনিত ত্বকের একটি রোগ।

শরীরের যেগুলো স্থানে এই ধরনের চর্মরোগ দেখতে পাওয়া যায় সেগুলো হল শরীরের বুক,পিঠ,গলা,হাত ও অন্যান্য উন্মুক্ত অংশে বেশি দেখা যায়।তবে কোন কোন সময় বিশেষ করে শিশুদের ক্ষেত্রে মুখেও দেখা দিতে পারে। অতিরিক্ত ঘামের কারণে শরীরের জীবাণু উৎপন্ন হয়। সঠিক সময়ে যদি শরীর পরিষ্কার করা না হয় তাহলে এই ধরনের চর্মরোগ দেখা দিতে পারে।

এই রোগের যথার্থ চিকিৎসা না নিলে ক্যান্সারের মতো ভয়াবহ রোগে পরিণত হতে পারে ভবিষ্যতে। এজন্য সঠিক সময়ে এর মোকাবেলা করা প্রয়োজন এবং এর জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা দরকার।
আক্রান্ত স্থানে সাদা বা বাদামি গাঢ় বা হালকা ছোট ছোট ছোপ ছোপ দাগের মতো দেখা দেয়।সাধারণত ফর্সা ত্বকে গাঢ় (গোলাপী/খয়েরী), শ্যামলা ত্বকে হালকা রঙের হয়।অনেকগুলি ছোপ ছোপ দাগ একসাথে হয়ে বড় দাগের সৃষ্টি করতে পারে।গরম বাড়লে চুলকানো বা জ্বালাপোড়া বেড়ে যেতে পারে।সংক্রমণ অনেক বেশী হলে চামড়া উঠতে পারে।তবে শীতকালে ছুলি অনেকটাই কমে যায়।

এই ধরনের চর্ম রোগ হওয়ার কারণগুলি এবার আমরা জেনে নেব। কি কারনে ছুলি রোগ হয় সেটা জানা থাকলে আমরা সতর্ক হতে পারব।
১) গরম,,আর্দ্র ও স্যাঁতসেঁতে আবহাওয়া।
২) প্রচুর ঘাম হওয়া।
৩) তৈলাক্ত ত্বক।
৪) দীর্ঘদিন স্টেরয়েড জাতীয় ওষুধ সেবন করলে।
৫) এন্টিবায়োটিক জাতীয় ওষুধ অনেকদিন যাবত সেবন করলে।
৬)রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে গেলে।
৭) অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস।
৮) সংক্রমিত ব্যক্তির সংস্পর্শে বা তার ব্যবহৃত জিনিসপত্র শেয়ার করলে।
এগুলো কারণে ধীরে ধীরে এরকম চর্মরোগ দেখা দিতে পারে শরীরের বিভিন্ন জায়গায়। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা এবং স্বাভাবিক জীবনযাপনের মাধ্যমে কিন্তু এই ধরনের চর্মরোগ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। এছাড়া অ্যান্টিসেপটিক জাতীয় বিভিন্ন ধরনের স্প্রে ব্যবহার করলে এইসব জীবাণু ছড়াতে পারে না।

ছুলি রোগ থেকে বাঁচতে কিছু উপায় এবার আমরা জেনে নেব। মূলত গরম কালে শরীরে অতিরিক্ত ঘাম হলে এই ধরনের চর্মরোগ দেখা দেয়। গরমকালে ঢিলেঢালা, পাতলা ও সুতি পোশাক পরিধান করা। শরীরের যেসব স্থানে ঘাম বেশি হয়,সেসব স্থান বারবার ধুয়ে পরিষ্কার ও শুকনো রাখা।গরমের দিনে রোজ একবার বা দুবার গোসল করা।
গোসলের পর গা ভালো করে শুকিয়ে নেওয়া।

ঘর্মাক্ত অবস্থায় বেশিক্ষণ না থাকা। ঘামে ভেজা পোশাক তাড়াতাড়ি পাল্টে ফেলা।না ধুয়ে আর ব্যবহার না করা।
রোদে গেলে ছাতা ও সানব্লক ব্যবহার করা।ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখা।দীর্ঘদিন অ্যান্টিবায়োটিক বা স্টেরয়েড সেবন পরিহার করা।পুষ্টিকর খাবার খাওয়া।প্রচুর পানি পান করা।অন্যের ব্যবহৃত তোয়ালে,গামছা,গামছা ইত্যাদি ব্যবহার না করা। একই ক্ষুরে একাধিক ব্যক্তি মাথা বা দাঁড়ি না কামানো । স্যাঁতসেঁতে আর্দ্র আবহাওয়ায় যথেষ্ট পরিস্কার পরিচ্ছন্ন থাকা।
পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখা ছুলি থেকে মুক্তির মহৌষধ। আমরা যদি উপরোক্ত নিয়ম কানুন গুলো মেনে চলি তাহলে এই ধরনের চর্মরোগ থেকে খুব সহজে মুক্তি পাওয়া যাবে।

আমরা জানতে পারলাম ছলি রোগ কি এবং এই রোগ কিভাবে ছড়ায় এবং এর প্রতিকার সম্পর্কে। এগুলো চর্মরোগ কিভাবে ছড়ায় সেগুলো যদি আমাদের জানা থাকে তাহলে আমরা সচেতন হতে পারব। আশা করি আমাদের এই সংক্ষিপ্ত প্রতিবেদনটি অনেক উপকারী হবে আমাদের ভিউয়ার্সদের জন্য।

Leave a Comment