আরতুগ্রুল গাজী সম্পর্কে বিভিন্ন তথ্য জেনে নেওয়ার পাশাপাশি তিনি বাস্তবিক জীবনে যে সকল উক্তি প্রদান করেছেন অথবা মূল্যবান কথা বলে গিয়েছেন সেগুলো ছবি আকারে অথবা লিখিত তথ্য আকারে এখানে পেয়ে যাবেন। জীবনে চলার পথে বিভিন্ন মনিষীদের অথবা বিভিন্ন বুদ্ধিমান ব্যক্তিদের কথা যদি আমরা শুনে চলতে পারি তাহলে অবশ্যই আমাদের জীবনটা সুন্দর হয়ে উঠবে। ওসমানীয় সাম্রাজ্যের স্বপ্নদ্রষ্টা এবং প্রথম ওসমানের পিতা হিসেবে পরিচিত আরতুগ্রুল এর কিছু তথ্য এখানে আপনাদের সামনে উপস্থাপন করা হলো। এই উক্তিগুলো আপনারা যদি পড়তে পারেন তাহলে দেখা যাবে যে মানুষ হিসেবে নিজের পরিচয় খুঁজে পাবেন অথবা ভেঙে পড়ার মুহূর্তে নিজের ভিতর সাহস সঞ্চার করতে পারবেন।
আরতুগ্রুল গাজী উসমানীয় সাম্রাজ্যের প্রতিষ্ঠাতা প্রথম ওসমানের পিতা হিসেবে পরিচিত ছিলেন। তিনি তার সাম্রাজ্যে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন এবং ধারাবাহিক ঘটনার মধ্য দিয়ে ওসমানীয় সাম্রাজ্য সৃষ্টিতে অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভাবে নেতৃত্ব প্রদান করেন। পরবর্তীতে তার যখন প্রথম ছেলে সন্তান হয় তখন তাকে প্রথম ওসমান এবং ভবিষ্যত যে সকল বংশধরেরা রয়েছে তাদের কেউ গাজী উপাধিতে সম্মোধন করা হয়েছিল। গাজী শব্দের অর্থ ইসলামের জন্য লড়াই করে এমন বীর যোদ্ধাদের বোঝানো হয়ে থাকে।
তিনি বৃহত্তর খোরাসান এ ১১৯৮ খ্রিস্টাব্দে জন্মগ্রহণ করেন এবং তুরস্কের বিলিতি প্রদেশে 1281 খ্রিস্টাব্দে মৃত্যুবরণ করেন। তিনি বাস্তব জীবনে স্ত্রী হালিমা খাতুন এর সঙ্গে সংসার করেছেন। অনেকে আমরা আরতুগ্রুল গাজী নামে তাকে চিনে থাকলেও তার পুরো নাম হলো আরতুগ্রুল গাজী বিন সুলেইমান শাহ। তার পিতার নাম ছিল সুলাইমান শাহ এবং মায়ের নাম ছিল হায়মা হাতুন। এছাড়া আপনারা যদি তার সম্পর্কে আরো কোন তথ্য জানতে চান তাহলে অবশ্যই আমরা জানিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করব। তাহলে চলুন তার বিভিন্ন উক্তি সম্পর্কে আমরা জেনে নেওয়ার চেষ্টা করি।
তার যে সকল উক্তি রয়েছে সেগুলো আমরা হুবহুভাবে তুলে ধরার পাশাপাশি এখানে একটু ব্যাখ্যা সহকারে যদি আলোচনা করি তাহলে আপনাদের অনেকেরই পক্ষে বুঝতে সুবিধা হবে। তিনি এটা বোঝাতে চেয়েছেন যে শিয়ালের রাজত্ব ততক্ষণ পর্যন্ত থাকবে যখন নেকড়েরা ঘুমিয়ে থাকবে। অর্থাৎ যোগ্য প্রতিনিধি আসলে আমাদের সমাজে অযোগ্য প্রতিনিধিরা যে রাজত্ব করে থাকে সেটা কখনোই দীর্ঘস্থায়ী হতে পারে না। তাছাড়া তিনি আনু বলেছেন সত্যিকারের যারা বীর পুরুষ তারা কখনো চোখ নামিয়ে কথা বলে না বরং সত্যের পক্ষে কথা বলতে তারা সব সময় মাথা উঁচু করে কথা বলে।
তাছাড়া তিনি তার রাজত্ব পরিচালনা করার জন্য বিভিন্ন ব্যক্তিদের এটা জানিয়ে দিয়েছেন যে সুলতান যখন যেভাবে হুকুম দিবেন সেগুলো পালন করার মধ্য দিয়ে রাজত্ব কায়েম করার জন্য অথবা আল্লাহ পাকের অনুশাসন মেনে চলার জন্য আমাদের কাজ করে যেতে হবে। তাই যদি সুলতান হুকুম দেয় তাহলে অবশ্যই সেটা ভালো কাজের জন্য দেবে এবং এ ক্ষেত্রে যদি আমাদের শাহাদাত বরণ করেন তাহলে সেটাও আল্লাহ আমাদেরকে প্রদান করবেন।
এছাড়াও তিনি মানুষকে স্বপ্ন দেখাতে চেয়েছেন এবং স্বপ্ন দেখানোর মধ্য দিয়ে একটি সুন্দর রাষ্ট্র তৈরি করার চিন্তা ভাবনা করেছেন। এক্ষেত্রে তিনি জানিয়েছেন যে যেই মানুষের কোন স্বপ্ন নাই তার কোন ভবিষ্যৎ নাই এবং ভবিষ্যৎ না থাকা মানুষকে অনেক সময় আমরা আমাদের সমাজে পঙ্গু বলে বিবেচনা করে থাকি। তাছাড়া তিনি সত্যের পক্ষে সব সময় অবিচল ও অনড় ছিলেন। সত্য প্রতিষ্ঠা করার জন্য এই পৃথিবীতে যদি সকলকে বিরক্ত করা লাগে অথবা সকলের বিরুদ্ধে যদি যাওয়া লাগে তারপরও তিনি সত্যের প্রতিষ্ঠা করেই ছাড়বেন।
তাছাড়া তিনি বিশ্বস্ততার প্রসঙ্গে কথা বলেছেন এবং তিনি জানিয়ে দিয়েছেন যে যারা অন্ধবিশ্বাস করবে তাদের কাছে বাস্তবতা বড় শত্রু হিসেবে কাজ করবে। তাছাড়া তিনি সকলকে সাহায্য করার বিষয়ে জানিয়ে দিয়ে বলেছেন যে মজলুমকেও সাহায্য করা যাবে যদিও সে সকলের শত্রু হয়। এরকমভাবে তিনি যে সকল উক্তি আমাদের উদ্দেশ্যে প্রদান করেছেন অথবা সেই সময় তিনি বলে গেছেন সেগুলো আমাদের বাস্তব জীবনে চলার পথের পাথেয় হিসেবে কাজ করে।