সফরকালে অথবা অন্য কোন ব্যক্তিগত প্রয়োজনে অথবা জরুরী কোন একটা বিশেষ ঘটনার কারণে যদি আসরের নামাজ কাজা হয়ে যায় তাহলে কিভাবে আসরের কাজা নামাজ পড়বেন তা এখান থেকে জেনে নিতে পারেন। কোন কারনে কোন ওয়াক্তের নামাজ যদি ছুটে যায় এবং পরবর্তীতে যদি সেটা আদায় করতে চান তাহলে সেটাকে কাজা নামাজ বলে। মানুষের জীবনে অনেক কারণে অথবা অনেক প্রয়োজনে অথবা ইচ্ছাকৃতভাবে নামাজ ছেড়ে দেয় এবং পরবর্তীতে উত্তোলন করবে বলে ভেবে থাকে। কিন্তু একজন মানুষের মৃত্যু কখন যে ঘটবে সেটা কেউ জানে না এবং এই প্রসঙ্গে আপনাদের কখনোই উচিত না নামাজ কাজা করা।
আমরা অহেতুক বসে সময় নষ্ট করি অথবা আড্ডা দিতে দিতে নামাজের সময় কখন যে পার হয়ে যায় তা খেয়ালী থাকে না। কিন্তু আপনি যদি প্রকৃত মুসলিম হয়ে থাকেন এবং আপনার যদি নামাজের প্রতি বিন্দুমাত্র ভালোবাসা থেকে থাকে তাহলে দেখবেন যে আযান দেওয়ার সাথে সাথে পুরুষ হিসেবে মসজিদে যেমন ছুটে চলে যাবেন তেমনি নারী হিসেবে ওযু করে বাড়িতেই নামাজ আদায় করবেন। কোথাও কোন ধরনের অনুষ্ঠানের দাওয়াত থাকলেও আপনার মাইন্ড সেট এভাবে থাকবে যে সেই সময়ে আপনি ওই ওয়াক্তের নামাজ আদায় করতে পারবেন কিনা।
প্রিয় ভাই এবং বোনেরা আপনারা অন্তত বেশ কিছুদিন একটু মনোযোগ দিয়ে নামাজ পড়ুন দেখবেন যে সেখানে এতটাই প্রশান্তি লুকিয়ে আছে যে আপনি অন্য কোথাও এই প্রশান্তি পাবেন না। প্রচন্ড মন খারাপের দিনে আপনি যখন সৃষ্টিকর্তার কাছে সিজদায় আপনার মনের কথাগুলো খুলে বলবেন অথবা দোয়া করে আপনার এ সকল সমস্যার জন্য সাহায্য চাইবেন তখন সমাধান হোক অথবা না হোক মনের দিক থেকে এক অন্য ধরনের প্রশান্তি পেয়ে যাবেন। নামাজ মানুষকে পরিশুদ্ধ করে এবং ভেতরের যাবতীয় পাপ ও অনাচারকে বের করে দিয়ে ভালো কিছুর চর্চা করে।
আপনি যখন নামাজ আদায় করবেন তখন সৃষ্টিকর্তার উদ্দেশ্যে যে দোয়া পাঠ করছেন এবং যে জিকর করছেন এবং দরুদ শরীফ পাঠ করছেন সেগুলোর বদৌলতে দেখবেন যে আপনার ভারী মন আস্তে আস্তে হালকা হতে শুরু করেছে। তাই নামাজ কখনই ছেড়ে যাওয়া উচিত নয় এবং জীবনের যেখানে যে অবস্থাতেই থাকুন না কেন পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করবেন। আমাদের জীবনে বিশেষ কিছু কাজ এমনভাবে সেট করে নিয়েছি যে সেগুলো না করলেই নয় অথবা সেগুলো না করলে আমাদের যেমন ভাল লাগে না তেমনি ভাবে নামাজের গুরুত্ব আরো বেশি হতে হবে।
কারণ আপনি আপনার জীবনে নামাজকে যতটা ফরজ ভাবে গ্রহণ করবেন ততটাই গুরুত্ব সহকারে এটা আদায় করতে পারলে মনের দিক থেকে প্রশান্তি অনুভব করতে পারবেন। তাই পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ নিয়মিত আদায় করার চেষ্টা করুন এবং কোন ভাবে যদি নামাজ কাজা হয়ে যায় তাহলে পরবর্তীতে আপনাকে সেই কাজা নামাজ আদায় করতে হবে। খুব ভালো করে লক্ষ্য করলে দেখবেন যে আপনার জীবনে এরকম অনেক নামাজ কাজা রয়ে গেছে অথবা আপনি নামাজ না আদায় করার কারণে সেগুলো সেভাবেই থেকে গিয়েছেন।
তাই প্রত্যেকদিন নামাজ আদায় করার ক্ষেত্রে আপনারা যখন মসজিদে সামিল হয়ে ফরজ নামাজ আদায় করবেন অথবা ফরজ নামাজের আদায় করার আগেই কাজা নামাজ আদায় করে নিতে পারেন। এক্ষেত্রে নিয়ত করতে হবে যে আপনি অমুক দিনের অমুক ওয়াক্তের নামাজ কাজা করেছেন এবং সেটা আদায় করার জন্য আল্লাহ পাকের কাছে কিবলামুখী হইয়া নিয়ত করছেন। এক্ষেত্রে কাজা নামাজ যদি অনেক আগেকার হয়ে থাকে এবং আপনার যদি সেই ওয়াক্তের কথা মনে না থাকে তাহলে আপনারা অবশ্যই জীবনের প্রথম কাজা নামাজ আদায় করার জন্য নিয়ত করছেন এভাবে শুরু করুন।
তাছাড়া আপনি যে ওয়াক্তের নামাজ কাজা আদায় করছেন সেটা যেভাবে আদায় করার কথা ছিল অর্থাৎ নামাজের যে নিয়ম ঠিক একই নিয়ম অনুসরণ করে নামাজ আদায় করতে হবে। তাই জীবনে কাজা নামাজের লিস্ট দীর্ঘ না করে প্রতিটা ক্ষেত্রে আমরা নামাজ যদি সময় মত আদায় করতে পারি তাহলে আমাদের জীবনের একটা গতিধারা যেমন ঠিক পথে পরিচালিত হবে তেমনি ভাবে আমরা নিজেদেরকে সফলতার পথে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারবো।