যে সকল মুসলমান ভাইয়েরা আসরের নামাজ পড়ার নিয়ম জানতে এখানে ভিজিট করেছেন তাদের উদ্দেশ্যে আমরা আসরের নামাজ কিভাবে পড়তে হবে সে বিষয়ে আলোচনা করব। আসরের নামাজ সারা দিনের যে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ রয়েছে তার ভেতরে তৃতীয় ওয়াক্তের নামাজ বলা হয়ে থাকে। যোহরের ওয়াক্ত শেষ হওয়ার পরেই এবং মাগরিবের ওয়াক্ত শুরু হওয়ার আগ পর্যন্ত আসরের ওয়াক্ত চলমান থাকে। আযান দেওয়ার সাথে আপনারা নিকটস্থ কোন মসজিদে গিয়ে যেমন আদায় করতে পারবেন তেমনি ভাবে উপরের উল্লেখিত ওয়াক্তের ভেতরে এই নামাজ আদায় করে নিতে পারবেন।
তবে আপনারা যেহেতু জানতে চেয়েছেন আসরের নামাজ কিভাবে আদায় করতে হয় তাদের উদ্দেশ্যে আমরা এখানে এই তথ্যগুলো বিস্তারিতভাবে উপস্থাপন করব। মূলত আসরের নামাজ চার ওয়াক্ত সুন্নত পড়া হয়ে থাকে এবং চার ওয়াক্ত ফরজ করা হয়ে থাকে। তবে অনেকেই তাড়াহুড়ার কারণে যারা জামাত ধরতে চান এবং সুন্নত পড়ার সময় না পান তারা সরাসরি চার রাকাত ফরজ পড়ে এই নামাজ শেষ করেন। স্বাভাবিকভাবে নামাজ যেভাবে আদায় করতে হয় ঠিক একইভাবে নামাজ আদায় করতে হবে এবং এভাবে আপনারা চার ওয়াক্ত নামাজ শেষ করতে পারেন।
তবে আসরের নামাজে জোরে জোরে কেরাত পড়া হয় না। আপনারা যদি জামাতের সঙ্গে নামাজ আদায় করেন তাহলে দেখা যাবে যে এখানে তাকবীর থেকে শুরু করে রুকুতে যাওয়ার জন্য এবং সিজদাতে যাওয়ার জন্য ঘোষণা প্রদান করা হয়ে থাকলেও কিরাত পড়া হবে মনে মনে। তাই আসরের নামাজ যখন জামাতের সঙ্গে আদায় করবে অথবা একা একা আদায় করবেন তখন কিরাত মনে মনে পড়তে হবে। দৈনন্দিন জীবনে মানুষের জন্য পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ ফরজ করে দেওয়া হয়েছে বলে আমরা অবশ্যই এটা খুবই গুরুত্বের সঙ্গে আদায় করব।
যতই গুরুত্বপূর্ণ কাজের অজুহাত দেখিয়ে আমরা নামাজ ছেড়ে দেই না কেন সেই কাজের মধ্যে কখনোই বরকত আসবেনা। কারণ পবিত্র কুরআন শরীফেই বলা আছে সফলতার জন্য আমাদেরকে মসজিদে যেতে হবে এবং এই সফলতা আদায় করার জন্য মসজিদে গিয়ে পাঁচ ওয়াক্ত সালাত আদায় করতে হবে। তাই যে সফলতা ধরার জন্য আপনি দৈনন্দিন জীবনে নামাজ ছেড়ে দিচ্ছেন সেই সফলতা হয়তো ধরা দিবে না অথবা ধরা দিলেও সেখানে বরকত থাকবে না।
তাই আপনি যখন নামাজ আদায় করবেন তখন অবশ্যই গুরুত্বের সঙ্গে এবং মনোনিবেশ করে নামাজ পড়বেন। অনেকে নামাজে দাঁড়িয়ে একাগ্রতা প্রকাশ না করার কারণে অথবা নামাজের মধ্যে মনোযোগ না থাকার কারণে সঠিকভাবে আদায় করতে পারেন না। তাই কেউ যদি আরিফ আজাদের সালাতে আমার মন বসে না অথবা অন্য কোন লেখকের বই পড়তে পারেন তাহলে নামাজে মনোযোগ আনার বিভিন্ন দিকনির্দেশনা বা ট্রিকস জানতে পারবেন। আর আসরের নামাজ কিভাবে পড়তে হয় সে প্রসঙ্গে যদি জানতে চান তাহলে বলবো যে এখানে আপনাদের দৈনন্দিন জীবনে চার রাকাত নামাজ যেভাবে আদায় করতে হয় ঠিক একই নিয়ম অনুসরণ করে আদায় করতে হবে।
তবে মসজিদে গিয়ে যদি পর্যাপ্ত পরিমাণ সময় হাতে পেয়ে থাকেন তাহলে সরাসরি গিয়ে সুন্নত নামাজ আদায় করার সাথে সাথে আপনারা সর্ব প্রথমে সময় থাকার ভিত্তিতে তাহিয়াতুল ওযুর দুই রাকাত নামাজ আদায় করে ফেলবেন। অনেকেই আছেন যারা সুন্নত নামাজ পড়েন না এবং তাহিয়্যাতুল ওযুর নামাজ পড়েন না। আর গিয়ে সরাসরি মসজিদে বসে পড়ে থাকেন এবং জামাত শুরু হলে সেখানে অংশগ্রহণ করেন। কিন্তু নবী-রাসূল থেকে শুরু করে তাঁদের সাহাবীগণ মসজিদে প্রবেশ করার সাথে সাথে দুই রাকাত তাহিয়াতুল ওজন নামাজ আদায় করেছেন। তাই আপনিও পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ অন্যায় করার ক্ষেত্রে সকল ক্ষেত্রে সঠিক নিয়ম অনুসরণ করে চলার চেষ্টা করুন।
প্রচন্ড মন খারাপের দিনে আপনি যখন সিজদায় পড়ে যাবেন তখন দেখবেন যে সেখান থেকে প্রশান্তি নিয়ে ফিরে আসতে পারছেন। তাছাড়া আসরের নামাজের পর এবং মাগরিবের ওয়াক্ত শুরু হওয়ার আগ পর্যন্ত দোয়া কবুলের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ একটা সময় হিসেবে বিবেচনা করা হয়ে থাকে। নামাজ শেষ করার পর বিভিন্ন ধরনের আমল করে আপনারা যদি মহান আল্লাহ পাকের কাছে খাস দিলে হালাল চাহিদা পূরণ করার জন্য দোয়া করেন তাহলে আল্লাহ পাক সেগুলো পূরণ করবেন।