বিচ্যুতি ও অপরাধ সংক্রান্ত আলোচনা এখন সামাজিক বিজ্ঞানের অন্যতম রচিত বিষয়। বিচ্যুতি ও অপরাধের বিজ্ঞানসম্মত আলোচনা কে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে সামাজিক বিজ্ঞানের নতুন একটি শাখা যার নাম অপরাধ বিজ্ঞান। মূলত সমাজের সংগঠিত বিচ্যুতি বা অপরাধমূলক আচরণের ধারাবাহিক প্রক্রিয়ার অনুশীলনী হচ্ছে অপরাধ বিজ্ঞান।
পাঠক বন্ধুগণ আজকে আমরা আলোচনা করব বিচ্যুতি এবং অপরাধ সম্পর্কে। সামাজিক এই গুরুতর বিষয়ে যথার্থ জ্ঞান থাকা আমাদের সকলের প্রয়োজন। একজন নাগরিক হিসেবে যদি অপরাধ এবং বিচ্যুতির মধ্যে পার্থক্য না করতে পারি তাহলে কি করে হবে।
আজকে আমাদের এই আর্টিকেলটি পড়লে আপনারা অপরাধ এবং বিচ্যুতি সম্পর্কে যথার্থ ধারণা পেয়ে যাবেন। অপরাধ এবং বিচ্যুতের মধ্যে পার্থক্য এই প্রশ্নটি সম্পর্কে যাবতীয় তথ্যের সমাহার নিয়ে আজকে আমরা আমাদের এই আর্টিকেলটি তৈরি করেছি। সামাজিক এই গুরুতর ও বিষয়টি সম্পর্কে মনোযোগ সহকারে পড়ার অনুরোধ রইলো সকল পাঠক বন্ধুগণকে।
অপরাধ ও বিচ্যুতির মধ্যে পার্থক্য:-
সমাজ ও সভ্যতার সাথে যখন মানুষের পরিচয় ঘটলো তখন থেকে মানুষের নিয়ম মাফিক জীবনের সূচনা হলো। মানুষের আচরণে আদিম বর্বরতা দূরীভূত হয়ে সুশৃংখল জীবনের অভ্যুদয় হলো সভ্যসমাজ। বুনো স্বভাব ত্যাগ করে মানুষকে কতগুলো নিয়ম-শৃঙ্খলা রীতিনীতি মূল্যবোধ আদর্শকে ধারণ করে জীবন যাপন করতে হলো। সমাজের সদস্যদের জীবনকে সুন্দর করার জন্য প্রণীত হলো সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় লিখিত বা অলিখিত আইন। এসব বৃত্তি নিত্তে আইন কানুন বিরোধী কাজ সামাজিক সংহতিক পরিবর্তে হিসেবে বিবেচিত।
অপরাধ এবং বিচ্যুতির মধ্যে পার্থক্য নির্ণয় করার পূর্বে আমাদের জানতে হবে অপরাধ এবং বিচ্যুতির সংজ্ঞা। সংজ্ঞা যদি না জানি তাহলে আমরা সাধারণ জ্ঞান সম্পর্কে জানতে পারবো না। কারণ জ্ঞান না থাকলে কোন বিষয়ের ওপর কাঙ্খিত জ্ঞান অর্জন অসম্ভব। এজন্য আমরা সহজ ভাষায় অপরাধ এবং বিচ্যুতের সংজ্ঞা আপনাদের সামনে তুলে ধরব। সংজ্ঞাগুলো মনোযোগ দিয়ে পড়ুন। যদি মনে রাখতে পারেন তাহলে যে কোন টপিকের ওপর বিস্তারিত আলোচনা করা সম্ভব।
বিচ্যুতি এর সংজ্ঞা।সমাজের প্রচলিত নীতি ভঙ্গ করে যে আচরণ করা হয় তাই হচ্ছে বিচ্যুতি। এখানে আমরা বিচ্যুতির সংজ্ঞা খুব সহজ ভাষায় উল্লেখ করেছি। আমরা অনেকেই জানিনা বিচ্ছেদি কি? এই সংজ্ঞাটি পড়লে খুব সহজেই আমরা বুঝতে পারবো আসলে কোন ধরনের আচরণ কে বিচ্যুতি শব্দ দ্বারা ইঙ্গিত করা হয়।
এবার আমরা অপরাধের সংজ্ঞা এবং অপরাধ সম্পর্কিত সংক্ষিপ্ত তথ্য আলোচনা করব। এক কথায় বলা যায় বেচ্যুতি এর চূড়ান্ত রূপই হলো অপরাধ। অর্থাৎ, সমাজে প্রচলিত রীতি ভঙ্গ করে যে আচরণ করা হয় তাই হচ্ছে বিচ্যুতি, যার চূড়ান্ত রুপ হলো অপরাধ। বিচ্যুতি বা অপরাধ একই বিষয় মনে হলেও এদের মধ্যে কিছু পার্থক্য পরিলক্ষিত হয়। অপরাধ এবং বিচ্যুতি এর মধ্যে কিছু পার্থক্য আলোচনা করা হলো।
বিচ্যুতি হলো কোন নির্দিষ্ট সমাজের প্রচলিত রীতিনীতি ভঙ্গ করা। অপরদিকে দন্ডবিধি ও ফৌজদারি কার্যবিধিতে উল্লেখিত সব ধরনের কার্যক্রমই অপরাধ বলে গণ্য। অপরাধ করলে আইনগত শাস্তির ব্যবস্থা রয়েছে। সামাজিক অস্বাভাবিক আচরণের চূড়ান্ত পর্যায়ে অপরাধ বলে গণ্য করা হয়। একজন অপরাধী একটি সমাজের জন্য অভিশাপ। অপরাধী কখনোই অপরাধ করে পার পেতে পারেনা। অপরাধী সবসময় তার অপরাধের জন্য আইন কর্তৃত্ব প্রদত্ত শাস্তি ভোগ করে।
আমাদের পাঠক বন্ধুদের বোঝানোর জন্য যদি সহজ ভাষায় বলি তাহলে বলা যেতে পারে যে, অপরাধের প্রাথমিক পর্যায়ে হলো বিচ্যুতি। যা সামাজিক জীবনে প্রতিনিয়ত পরিলক্ষিত হচ্ছে। সমাজ হলো একটি রাষ্ট্রের একক। একটি রাষ্ট্রের সংবিধান অনুযায়ী দেশ পরিচালিত হয়। সমাজের কিছু নিয়ম-নীতি রয়েছে যেগুলো দ্বারা জনসমাজকে নিয়ন্ত্রণ করা হয় এবং একটি দেশকে নিয়ন্ত্রণ করতে সমাজের ভূমিকা ব্যাপক। বিচ্যুতি হল সামাজিক বিশৃঙ্খলার প্রধান কারণ। অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের ভূমিকা হল বিচ্যুতি। এই বিচ্যুতি যখন বিরাট আকাল ধারণ করে এবং বড় ধরনের ক্ষতিসাধন করে তাকে অপরাধ বলে গণ্য করা হয়।
অতি সহজ ভাষায় আমাদের বন্ধুদের বোঝানোর জন্যই আর্টিকেলটি তৈরি করা হয়েছে। আশা করি এই আর্টিকেলটি পাঠক বন্ধুদের কাছে স্পষ্ট ধারণা নিয়ে উপস্থাপন করা হয়েছে। প্রিয় পাঠক বন্ধুগণ আজকের মত এই পর্যন্তই আল্লাহ হাফেজ।