দেখা যায় যে আমাদের দেশে বিভিন্ন সময় টাকার মানের কমবেশি হয়ে থাকে। যখন বাংলাদেশে এক হাজার টাকার নোট সর্ব প্রথমে ছাপা হয় তখন ২৬ হাজার টাকা ভরি স্বর্ণ ছিল। কিন্তু এখন যদি আপনি স্বর্ণ কিনতে যান তাহলে কিন্তু সেটা প্রায়ই লাখ টাকার মত লাগবে এক ভরি কিনতে। তাহলে তখনকার সময়ে ২৬ হাজার টাকা দিয়ে কিনতে গেলেও ২৬ টা ১ হাজার টাকার নোট লাগতো এবং বর্তমান সময়ে আপনি যদি এক লক্ষ টাকা দিয়ে কিনেন তাহলে আপনার কিন্তু একশোটা এক হাজার টাকার নোট লাগবে। সম্পদ একই থাকলেও এখানে আপনাকে কোন পণ্য কেনার জন্য বেশি পরিমাণে টাকা খরচ করতে হচ্ছে।
তাই আপনার মনে হয়তো প্রশ্ন জেগেছে যে টাকার মান কিভাবে নির্ধারণ করা হয় অথবা পণ্যের দামের সঙ্গে টাকার মানের এই যে সম্পর্ক রয়েছে এটা কিভাবে করা হয়ে থাকে। তাই এ সকল প্রশ্নের উত্তর অথবা এ সকল বিষয়ে ধারণা নিয়েই আপনাদের জন্য আমরা এখানে হাজির হয়েছি। আপনারা এখান থেকে এই সংক্রান্ত তথ্যগুলো জেনে নিয়ে বাস্তবিক জীবনে কাজে লাগাতে পারবেন বলে মনে করি। তাহলে আমাদের ওয়েবসাইটের প্রদান করা তথ্য গুলো ভালোমতো পড়ুন।
একটা দেশে টাকার পরিমাণ যদি বেশি হয় অথবা টাকা যদি বেশি পরিমাণে ছাপা হয়ে থাকে তাহলে দেখা যাবে যে কোন একটা পণ্য বা সেবা নিতে গেলে আপনাকে বেশি পরিমাণে টাকা দিতে হবে।আবার কোন একটা পণ্যের উৎপাদন বেশি হয়ে থাকলে এবং সেই দেশে টাকার পরিমাণ কম থাকার কারণে তখন টাকার মান অনেক বেশি বৃদ্ধি পেয়ে যাবে। এক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংক যেভাবে টাকার মান নির্ধারণ করে থাকে সেটা হল পণ্যের উৎপাদন কেমন হচ্ছে এবং বাইরের দেশ থেকে পণ্য আনার ফলে সেটার মোট খরচ কেমন পড়ছে তার উপরে।
সুতরাং টাকার মান নির্ধারণ কিভাবে করা হয় এটা যদি জানতে চান তাহলে বলব যে ক্রয়ক্ষমতার উপরে নির্ভর করে এ সকল মান নির্ধারণ করা হয়ে থাকে। অর্থাৎ দ্রব্যের মানের অথবা দামের যদি পার্থক্য ঘটে থাকে তাহলে টাকার মানের ও দামেরও পার্থক্য ঘটে থাকবে। অর্থাৎ এই তথ্য অনুযায়ী আমরা বলতে পারি যে দ্রব্যের দামের সাথে টাকার মানের সম্পর্ক বিপরীত হয়ে থাকে। যদি দ্রব্যের দাম কমে যায় তাহলে টাকার মান বৃদ্ধি পাবে এবং টাকার মান যদি কমে তাহলে দ্রব্যের দাম কিন্তু আবার বৃদ্ধি পেয়ে যাবে।
টাকার মান কিভাবে বাড়ে কমে
একটা দেশে কি পরিমান পণ্য উৎপাদন হচ্ছে অথবা সেবা প্রদান করা হচ্ছে সেটার উপরে টাকার মান বাড়ে কমে। অর্থাৎ একটা দেশের ভেতরে এক বছরে কি পরিমান সম্পদ উৎপাদন হচ্ছে অথবা কি পরিমাণ ফসল উৎপাদন হচ্ছে তার ওপরে জনগণের চাহিদা কিরূপ রয়েছে সেগুলোর জন্য টাকার মাধ্যমে প্রত্যেকটি দ্রব্যের দাম নির্ধারণ করা হয়ে থাকে। এক্ষেত্রে আপনার টাকা থাকলে আপনি বেশি টাকা দিয়ে সেটা ক্রয় করার ক্ষমতা রাখেন এবং এরকমটাই সিস্টেম করে প্রত্যেকটি ব্যবস্থাকে পরিচালনা করা হয়।
টাকার মান কিভাবে নির্ণয় করা হয়
মোট উৎপাদিত পণ্যের সাথে যখন আমাদের দেশের চাহিদা পূরণ করার জন্য বাইরের দেশ থেকে বিভিন্ন পণ্য আনা নেওয়া করা হয় তখন সেই পণ্যের দাম কিছুটা বেশি পরে। তখন সেই পণ্যের দাম এবং মোট উৎপাদিত পণ্যের দাম একত্রিত করে গড় হিসেবে পণ্যের একটা নির্দিষ্ট দাম নির্ধারণ করা হয়। এই নির্ধারিত দামে যাদের টাকা রয়েছে তারা পণ্য কেনার ক্ষমতা রাখে এবং এই পণ্যটি যখন কিনতে চাইবে তখন সেখানে টাকার মানের কম বেশি হবে। পণ্যের উৎপাদন বেশি হয়ে থাকলে কম টাকা দিয়ে সেটা কেনা যাবে এবং কম উৎপাদন হয়ে থাকলে আপনাকে সেই জিনিসটা কেনার জন্য বেশি টাকা দিতে হবে।
দেশে টাকার মান কিভাবে কমে
টাকার মান কমে যাবে যদি জনসংখ্যা বেশি হয়ে থাকে এবং পণ্যের উৎপাদন কমে থাকে। অর্থাৎ টাকা থাকলে আপনি কোন একটা পণ্য কেনার ক্ষমতা রাখেন এবং সেই ভিত্তিতে কোন পণ্যের দাম নির্ধারণ করা হয়ে থাকে এবং সেই পণ্য কিনতে গেলে আপনাকে বর্তমানের চাইতে ভবিষ্যতে আরও বেশি টাকা খরচ করতে হবে। কথার কথা একই পণ্য কিন্তু আপনার দুই হাজার টাকা খরচ হয়ে থাকলে ভবিষ্যতে সেই পণ্য কেনার জন্য আপনাকে কিন্তু 5000 টাকা খরচ করে লাগতে পারে। ধন্যবাদ।