যে সকল মুসলিম ভাইয়েরা এশার নামাজ কত রাকাত জানতে চেয়েছেন তাদের উদ্দেশ্যে আমরা এখানে এই প্রসঙ্গে আলোচনা করতে চলেছি। প্রত্যেকটা মুসলমানের জন্য নামাজ ফরজ করে দেওয়া হয়েছে এবং আমরা সারাদিনে যতটাই ব্যস্ত থাকি না কেন এশার নামাজ থেকে শুরু করে অন্যান্য প্রতিটা ওয়াক্তের নামাজে জামাতের সঙ্গে শরিক হওয়ার চেষ্টা করব। অনেকে যেমন ব্যস্ত দেখে নামাজ পড়া থেকে বিরত থাকেন আবার অনেকে বসে থেকেও নামাজ পড়ার প্রতি আগ্রহ দেখান না। এই দুনিয়ার জীবনের অর্থ সম্পদ অথবা এত এত সম্পর্ক কোন কিছুই আপনার সাথে যাবে না। কিন্তু আপনার প্রকৃত আমলগুলো অবশ্যই আপনার সাথে যাবে এবং সেগুলো পরকালে আপনাকে জান্নাত লাভের জন্য সাহায্য করবে।
যেখানে মহান আল্লাহ পাক পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ প্রত্যেকটা মুসলমানের জীবনে ফরজ করে দিয়েছেন সেখানে আমরা অবশ্যই পালনীয় কাজগুলো করা থেকে অনেক সময় বিরত থাকি। আপনাকে যদি খেতে বারণ করা হয় অথবা আপনি যদি না খেয়ে থাকতে চান তাহলে সেটা কখনোই সম্ভব হবে না। ঠিক আমাদের জীবনে যে সকল কাজগুলো করতেই হবে এবং যেগুলো না করলেই নয় তার চাইতেও সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ হলো নামাজ আদায় করা। অর্থাৎ নামাজ আদায় করার ক্ষেত্রে কোন ছাড় হবে না এবং আপনি শারীরিক যে অবস্থাতেই থাকুন না কেন পাক পবিত্র থেকে আপনাকে নামাজ আদায় করতে হবে।
কিন্তু আমাদের ভেতরে অনেকেই আছে যারা সকল ধরনের সকল শর্ত পূরণ করার পরও নামাজ পড়তে চায় না। কিন্তু একটা মুসলিম যখন নামাজের প্রকৃত স্বাদ হয়ে যাবে অথবা নামাজ পড়ার মাধ্যমে যখন মানসিক প্রশান্ত অনুভব করতে পারবে তখন সে নিজের পরিবর্তন নিজেই বুঝতে পারবে। যাবতীয় ব্যর্থতা অথবা হতাশা থেকে শুরু করে অন্যান্য সকল কিছু আপনারা একমাত্র আল্লাহ পাকের কাছে খুলে বলতে পারেন এবং এই বিষয়ে সাহায্য চাইতে পারেন।
হয়তো আপনি মনে মনে অনেক দোয়া করছেন এবং আল্লাহ পাকের কাছে মন খুলে চাইছেন কিন্তু আপনার জীবনে যদি ফরজ কাজগুলো সম্পন্ন না হয়ে থাকে তাহলে আপনার দোয়া কবুল হবে না। আর দোয়া কবুলের ক্ষেত্রে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করতে হবে এবং আপনারা যদি বিশেষ করে তাহাজ্জুদ নামাজ আদায় করেন তাহলে তার মাধ্যমে আল্লাহ পাকের কাছে অবশ্যই আপনার প্রয়োজনীয় হালাল নেক চাহিদাগুলো পূরণ করার জন্য আবেদন করতে পারবেন।
একজন মুসলমানের জীবনে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ ফরজ করা হয়েছে এবং সেই হিসেবে দিনের শেষ ওয়াক্তের নামাজের নাম হল এশার নামাজ। তাই আপনারা যদি এশার নামাজ কয় রাকাত সেটা জানতে চান তাহলে বলব যে পরিপূর্ণভাবে এই নামাজ পড়লে আপনাদের ১৫ রাকাত নামাজ আদায় করতে হবে। তবে মসজিদে গিয়ে আপনারা যদি পর্যাপ্ত পরিমাণ সময় হাতে নিয়ে নামাজ আদায় করতে চান তাহলে তাহিয়াতুল ওযুর নামাজ দুই রাকাত আদায় করে ফেলবেন। তারপরে নিয়ম অনুযায়ী চার রাকাত সুন্নত নামাজ আপনাদেরকে আদায় করতে হবে।
এরপরে আপনারা ইমামের সাথে চার রাকাত ফরজ নামাজ আদায় করার পরে পরবর্তীতে দুই রাকাত সুন্নত নামাজ এবং দুই রাকাত নফল নামাজ আদায় করবেন। এরপরে আপনারা এশার তিন রাকাত বেতের ওয়াজিব নামাজ আদায় করে সেদিনকার মত নামাজ শেষ করতে পারেন। তবে এই নামাজগুলো উল্লেখ করা হয়ে থাকলেও অনেকে আছেন যারা চার রাকাত ফরজ নামাজ পড়ার পর দুই রাকাত সুন্নত নামাজ এবং তিন রাকাত বেতের নামাজ পড়ে নামাজ শেষ করেন।
অর্থাৎ ভ্রমণ অবস্থায় আছেন অথবা জরুরী ভিত্তিতে আপনারা ফরজ নামাজ আদায় করার পাশাপাশি সুন্নত নামাজ এবং বেতের ওয়াজিব নামাজ অবশ্যই আদায় করবেন। আশা করি উপরের আলোচনার ভিত্তিতে আপনারা এশার নামাজ কয় রাকাত সে সম্পর্কে ধারণা করতে পেরেছেন। তাই জীবনে যে অবস্থাতেই থাকুন না কেন অথবা যত ব্যস্ত এটাই থাকুন না কেন নামাজের জন্য আলাদাভাবে সময় বের করার চেষ্টা করুন। আর সকল ধরনের ব্যস্ততা অথবা সকল ধরনের পেরেশানির মধ্যে আপনি যখন পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ নিয়মিত আদায় করবেন তখন দেখবেন যে সকল কিছুতে আল্লাহ পাক আপনার প্রতি বরকত প্রদান করেছেন।