সাধারণ অর্থে খাজনা হলো সরকারকে দেওয়া কর। বিভিন্ন বিষয় বা বিভিন্ন বস্তু পণ্য যা বলি না কেন সেগুলো ব্যবহার করতে হলে বা ভোগ করতে হলে অবশ্যই যে দেশে বসবাস করা যায় সেই দেশের সরকারকে ট্যাক্স বা কর দিতে হয়। আর খাজনা হল আমাদের দেশের প্রাচীনকালের প্রাচীন ভাষা। যে ভাষা থেকে দেখা যত যে জমিদারগণ বা রাজাগণ তাদের প্রজাদের থেকে যে কর গুলো হতে পারে ফসলের কর অথবা জমির কর গ্রহণ করত তাদেরকে সাধারণত খাজনা বলা হয়।
তারপরেও আমরা দেখে নিতে পারি সঠিক ভাষায় কাজ না অর্থ কি সেই বিষয়টি। ক্লাসিক্যাল অর্থনীতিবিদদের মতে, অস্থিতিস্থাপক যোগান বিশিষ্ট প্রাকৃতিক সম্পদ; যেমন- জমি, খনি, মৎস্য সম্পদ, প্রভৃতি ব্যবহারের জন্য এসবের মালিককে যে অর্থ দেওয়া হয় তাকে খাজনা বলে। জমির ব্যবহারের জন্য যে অর্থ তার মালিককে দেওয়া হয় তাকে খাজনা বলে।
জমির খাজনা
জমিদাররা তাদের জমি তাদেরকে দিতে এবং প্রজারা একটি অর্থের বিনিময়ে সেই জমি প্রতিবছর ফসল ফলাত। এখন প্রতিবছর এই জমি ফসল উৎপাদন করা বা এই জমি ভোগ করা বাবদ জমির মালিক কে এক ধরনের বায় নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা দিতে হতো। জমির মালিক কে যারা জমি ভোগ করবে তাদেরকে যেহেতু নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ দাওয়াই কেই আসলে খাজনা বলা হয়।
রাজ রাজাদের সময় থেকে বেরিয়ে এসে যখন এখন আমরা গণতান্ত্রিক দেশে বসবাস করি বা আধুনিক রাষ্ট্রযন্ত্রের ক্ষেত্রেও এই খাজনা রয়েছে। অর্থাৎ পূর্বে আমরা খাজনা দিতাম রাজাদেরকে কিন্তু এখন আমরা খাজনা দিয়ে থাকি সরকারকে। তাই প্রাচীন আমলের রাজ রাজাদের তৈরি করে যাওয়ার রাষ্ট্রীয় কর বা জমিদারদের সাধারণ ভূমিকা এখন আধুনিক রাষ্ট্রযন্ত্রেও খাজনা নামেন পরিচিত হয়েছে। মানুষ তথ্য প্রযুক্তিতে উন্নত হওয়ার কারণে বর্তমানে জমির এই খাজনা পরিশোধ করতে
বেশিরভাগ মানুষেরই আর তেমন কোন সমস্যা হয় না। কিন্তু পূর্বে যখন কৃষকরা জমিদারদের খাজনা পরিশোধ করতে হতো তখন তাদের সকলের প্রায় অনেক অংশই রাজাদের ঘরে চলে যেত। তখন রাজারা যে কর ধার্য করতো বা করেছিল তা দিতে মানুষকে হিমশিম খেতে হতো কিন্তু বর্তমান আধুনিক যুগে মানুষের আয় বেড়েছে এক কৃষি পণ্য ছাড়া আর কিছু ছিল না প্রাচীনকালে বা পূর্বে। তাই তাদের খাজনা দিতে বা সরকারি সেই কর্তিতে অনেকটাই কষ্ট পেতে হতো বা হিমশিম খেতে হতো।
খাজনা পরিশোধের নিয়ম
জমিকে খতরান সে বিভক্ত করে প্রতি ক্ষুদ্রাংশের একটি অংশ নির্ধারণ করা হতো খাজনা। বর্তমান সময়ে আমরা এক একর ভূমিকে ১০০০ ডেসিমাল হিসাব করে প্রতি প্রতি অংশকে এক সহস্রাংশ বলা হয়। আর এই পরিমাপের ক্ষেত্রে যদি একশত এককের এক একক হলো শতক বা শতাংশ। ভূমিকার এই শতাংশ হিসেবে পরিশোধ করতে হয়। ১ শতক ভূমির বা বিঘার কর আলাদা আলাদা ভাবে ধরা হয়।
অর্থাৎ জমির কর একরকম ভিটা বা বাড়ির জমির আলাদা শতাংশ হিসেবে পরিশোধ করতে হয়। হঠাৎ কৃষি জমি থেকে শুরু করে অন্যান্য জমির ভাগ রয়েছে এবং সেই জমির ক্ষেত্রে অনুযায়ী বা শ্রেণি অনুযায়ী জমির শতাংশ প্রতি খাজনা নির্ধারণ করা হয়। তাই আপনারা যদি এক শতক জমির খাজনা কত সেই হিসাবটি জানতে চান তাহলে অবশ্যই অনেকগুলি হিসাব এখানে দেখে নিতে হবে।
শতক প্রতি জমির খাজনা
আপনারা জানেন যে, জমি অনুযায়ী বা শ্রেণী অনুযায়ী জমির খাজনা আলাদা হয় এবং সেই বিষয়টি এখন আপনারা আমাদের এখান থেকে বিস্তারিত ভাবে দেখে নিতে পারেন। সাধারণত ১০ একর হতে ১৫ একর পর্যন্ত প্রথম ১০ একরের জন্য ২৩১ টাকা এবং পরবর্তী প্রতি শতাংশের জন্য ৬০ পয়সা। ১৫ একর থেকে ২৫ একর পর্যন্ত প্রথম ১৫ একরের জন্য ৫৩১ টাকা এবং পরবর্তী প্রতি শতাংশের জন্য ৬০ পয়সা। ২৫ একরের উপর হলে প্রথম ২৫ একরের জন্য ১৪৮১ টাকা এবং পরবর্তী প্রতি শতাংশের জন্য ১ টাকা ৪৫। তাহলে আপনারা অবশ্যই বুঝে নিতে পারলেন যে শ্রেণী অনুযায়ী জম ির শতকপ্রতি খাজনা কত টাকা সে বিষয়টি।