কিভাবে মোটা হওয়া যায়

ওজন কম হলে কেউ পছন্দ করেনা। বেশি মোটা হওয়া যাবে না আবার একেবারেও রোগা হওয়া কিন্তু যাবে না। উচ্চতা অনুযায়ী সঠিক ওজন থাকতে হবে। আমরা চাইলে আমাদের নিত্যদিনের খাদ্য অভ্যাস এর মাধ্যমে কিন্তু আমাদের শরীরের সঠিক ওজন বৃদ্ধি করতে পারি। সঠিক ডায়েট সম্পর্কে জানতে হবে। কিছু নিয়ম কারণ মেনে চলতে হবে। ব্যায়াম করার পাশাপাশি যেগুলো খাবার খেলে ওজন বৃদ্ধি পায় সেগুলো খাবার খেতে হবে। আজকে আমাদের এই আর্টিকেলে আমরা আপনাদের একদম সঠিক ওজন বৃদ্ধি করার নিয়ম গুলো সম্পর্কে বলবো। আমাদের এই আর্টিকেলটি ফলো করে যদি আপনি এক মাস চলেন তাহলে দেখবেন আপনি কমপক্ষে চার থেকে পাঁচ কেজি ওজন বৃদ্ধি করতে পেরেছেন।

বিভিন্ন কারণে ওজন কম হতে পারে। অনিয়মিত খাদ্যাভ্যাস, জেনেটিক কারণ, মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা, ডায়রিয়া, ক্যান্সার, ডায়বেটিস, এইডস, হাইপারথাইরয়েডিজম, আর্থ্রাইটিস, যক্ষ্মা, কিডনির সমস্যা, ফুসফুসের সমস্যা, ড্রাগ নেওয়া ইত্যাদি। এছাড়া বয়সের জন্যও ওজন কমবেশি হয়ে থাকে। ওজন বাড়ানোর ক্ষেত্রে সর্বপ্রথম এইদিকগুলো লক্ষ্য রাখতে হবে।

অনেকেই ভেবে থাকেন ওজন কমাতেই ব্যায়াম প্রয়োজন, কিন্তু এই ধারণা মোটেও ঠিক না। ওজন কমাতে যেমন ব্যায়াম প্রয়োজন ঠিক তেমনি ওজন বাড়াতেও ব্যায়াম করা খুবই প্রয়োজন। এক্ষেত্রে শুধু দৌড় ঝাঁপই যথেষ্ট না। দরকার প্রতিদিন নিয়ম করে জিম করা। জিমে অভিজ্ঞ ট্রেইনার থাকেন। আপনার ওজন এবং চেহারা দেখে তিনিই আপনাকে বলে দিবেন কোন ব্যায়াম আপনার করতে হবে।বার বার খাবার গ্রহণ প্রতিটি মানুষেরই করা উচিৎ।

প্রতি ২ ঘন্টা অন্তর অন্তর অল্প করে কিছু খেতে হবে। কিন্তু যারা ওজন বৃদ্ধি করতে চাচ্ছেন তারা ২ ঘন্টা পর পর বেশি করে খেতে হবে। এসময় আপনি দুধ, দই, ফল, ছানা ইত্যাদি দিয়েই পূরণ করতে পারেন। এতে আপনার শরীরে পুষ্টির পাশাপাশি ওজনও বৃদ্ধি পাবে। এটি মোটা হওয়ার সবচেয়ে সহজ উপায়।ওজন বৃদ্ধিতে কার্বোহাইড্রেড খুবই প্রয়োজন। খাবারের তালিকায় কার্বোহাইড্রেড অবশ্যই রাখবেন। ভাত ও রুটি কার্বোহাইড্রেডের প্রধান উৎস। তাই প্রতিদিন অন্তত ২ বার কার্বোহাইড্রেড খাবেন।

ভাত ও রুটি কার্বোহাইড্রেডের প্রধান উৎস তার মানে এই নয় যে বেশি বেশি খাবেন। আপনাকে অতিরিক্ত ফ্যাটের দিকেও লক্ষ্য রাখতে হবে। তাই প্রতিদিন কার্বোহাইড্রেড খাবেন পরিমিত কিন্তু সাধারণের তুলনায় কিছুটা বেশি। মোটা হওয়ার সহজ উপায় গুলোর মধ্যে এটি অন্যতম।ওজন কমানোর ক্ষেত্রে আমরা বেশি ক্যালোরি বার্ন করি এবং কম ক্যালোরি গ্রহণ করি। কিন্তু এই ক্ষেত্রে উলটা হবে যতটুকু ক্যালোরি বার্ন করবেন তার দ্বিগুণ ক্যালোরি গ্রহণ করতে হবে। ওজন বৃদ্ধির জন্য শরীরের চাহিদার তুলনায় বেশি ক্যালোরি নিন। ওজন দ্রুত বৃদ্ধি করতে চাইলে দিনে ৬০০-৭০০ ক্যালোরি বেশি গ্রহণ করতে হবে আর যদি ওজন আস্তে আস্তে বাড়াতে চান তাহলে প্রতিদিন ৪০০-৫০০ ক্যালোরি বেশি গ্রহণ করতে হবে। এভাবে এক সপ্তাহ করলেই আপনার ওজন বৃদ্ধি পাবে।

ওজন বৃদ্ধি করতে শুধুমাত্র ক্যালোরিই যথেষ্ট না। ক্যালোরির পাশাপাশি সঠিক প্রোটিন গ্রহণ করতে হবে। সঠিক প্রোটিন গ্রহন না করলে ক্যালোরি বাড়তি ফ্যাটের কারণ হয়ে দাঁড়াবে। তাই প্রতিদিনের খাবারের তালিকায় প্রোটিন জাতীয় খাবার যেমন ডিম, ডাল ও দুধ অবশ্যই রাখবেন।ড্রাই ফ্রুটসে আছে প্রচুর ক্যালোরি ও ফ্যাট যা ওজন বৃদ্ধিতে অনেক কাজে দিবে। প্রতিদিন ঘুম থেকে উঠেই ২টি কাজু ও ২টি কিসমিস খাবেন। এইটা কোনভাবেই ভুলবেন না। আর সকালের নাস্তায় রাখুন আমন্ড বা পেস্তা। ওজন বৃদ্ধিতে আপনার ডায়েট চার্টে বাদামের পরিমাণ বেশি রাখুন। এভাবে নিয়ম মেনে ড্রাই ফ্রুটস খেলে দেখবেন এক মাসের মধ্যেই আপনার ওজন বৃদ্ধি পাচ্ছে।

সব সমস্যার সবচেয়ে বড় কারণ হচ্ছে টেনশন। ওজন বৃদ্ধিতে যেমন টেনশনমুক্ত থাকা প্রয়োজন ঠিক তেমনি ওজন কমাতেও টেনশনমুক্ত থাকা খুবই আবশ্যক। আজকাল টেনশনমুক্ত থাকা খুবই কঠিন তাও চেষ্টা করবেন যতটা সম্ভব টেনশনমুক্ত থাকার।শরীর ঠিক রাখতে ঘুম খুবই প্রয়োজন। প্রতিদিন ৮ ঘন্টা অবশ্যই ঘুমাতে হবে। এর থেকে কম হওয়া যাবে না। এছাড়া ঘুম থেকে উঠে প্রতিদিন নিয়ম করে ইয়োগা বা যোগাসন করুন। এতে আপনার ওজন দ্রুত বৃদ্ধি পাবে।

Leave a Comment