ছেলে সন্তান হওয়ার ওষুধ

আজকে এই আর্টিকেলটিতে আমরা কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য আলোচনা করব। তাই শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত মনোযোগ দিয়ে পড়বেন সবার জন্য এটা পড়া খুবই প্রয়োজন।বিশেষ করে গ্রামের অনেক অশিক্ষিত মানুষ রয়েছে যারা বিশ্বাস করে যে বিভিন্ন ধরনের টোটকা এবং বিভিন্ন ধরনের ঔষধ খেলে পুত্র সন্তান হয়। সবাই আমার মনে করে যে পুত্র সন্তান অথবা কন্যা সন্তানের জন্য সরাসরি একজন মহিলা দায়ী। কন্যা সন্তান হলে মাকে সবচেয়ে বেশি দায়ী করা হয়।

অনেক গ্রাম অঞ্চলে এটাও দেখা যায় যে বারবার কন্যা সন্তান জন্মদানে স্বামী-স্ত্রীর বিচ্ছেদ পর্যন্ত হয়ে যায়। এই ধরনের কুসংস্কার মুছে ফেলতে হবে এবং বৈজ্ঞানিকভাবে জীব বিজ্ঞানের এই গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়টি সম্পর্কে সবাই জানতে হবে। আজকে আমরা সহজ ভাষায় আপনাদের গুরুত্বপূর্ণ কিছু তথ্য সম্পর্কে জানাতে চাই।

অনেকে জিজ্ঞেস করে যে পুত্র সন্তান হওয়ার জন্য কি ওষুধ পাওয়া যায়?
বাকি করলে পুত্র সন্তান হবে?পুত্র সন্তানের আশায় অনেক দম্পতিরা বিভিন্ন ধরনের চিকিৎসা পর্যন্ত করে।
প্রশ্নের উত্তর হবে সন্তান এর লিঙ্গ নির্ধারণ করার জন্য কোন ঔষধ নেই। এবং এই লিঙ্গ নির্ধারণের উপর কারো হাত নেই। বিশেষ করে মহিলাদের এতে কোন অবদান নেই। সন্তানের লিঙ্গ নির্ধারণে সম্পূর্ণ অবদান পালন করে একজন পুরুষ।

কিভাবে লিঙ্গ নির্ধারণ হয় সেটা যদি আপনারা জানেন তাহলে এই ধরনের অবান্তর প্রশ্নের উত্তর আপনারা জানতে চাইবেন না। এখন আমরা আপনাদের সাথে সহজ ভাষায় বৈজ্ঞানিক যুক্তি দিয়ে আলোচনা করতে চাই যে কিভাবে একটি সন্তান জন্মগ্রহণ করে এবং কিভাবে সেই সন্তানের লিঙ্গ নির্ধারণ হয়।চলুন গুরুত্বপূর্ণ এই আলোচনাটি মনোযোগ দিয়ে লক্ষ্য করা যাক।

মানবদেহে ২৩ জোড়া ক্রোমোজোম রয়েছে। এর মধ্যে ২২ জোড়া ক্রোমোজোম শরীরের বিভিন্ন অংশে বিভিন্ন হরমোন জাতীয় কার্যক্রম সম্পাদন করে। কিন্তু বাকি এই এক জোড়া ক্রোমোজোম হলো মানুষের সেক্স ক্রোমোজোম। পুরুষ এবং মহিলাদের দেহে উপস্থিত। মহিলাদের এই দুইটি সেক্স ক্রোমোজোম একই হয়ে থাকে। মহিলাদের দুইটি সেক্স ক্রোমোজোম হলো এক্স। অর্থাৎ x এবং x ( x , x) অপরদিকে পুরুষদের দুইটি সেক্স ক্রোমোজোমের মধ্যে একটি হল এক্স এবং অপরটি হলো ওয়াই। (x এবং y) অর্থাৎ (x,y)। এই দুটি ক্রোমোজোম সরাসরি একটি মানব শিশুর লিঙ্গ নির্ধারণের জন্য দায়ী।

পুরুষদের নির্গত বীর্য হতে এই দুইটি ক্রোমোজোমের যেকোনো একটি ক্রোমোজোম মহিলাদের একটি ক্রোমোজোমের সঙ্গে নিষেধ ঘটায়। এবং জায়গোট তৈরি করে। এই জায়গাট নিষেধ হওয়ার ৪০ সপ্তাহের মধ্যে একটি সম্পূর্ণ মানব শিশুদের রূপান্তরিত হয়। পুরুষের ক্রোমোজোম এর মধ্যে y ক্রোমোজোম যদি মহিলাদের একটি যে কোন ক্রোমোজোমের সঙ্গে নিষেধ ঘটায় তাহলে এর লিঙ্গ টি হবে (x,y) অর্থাৎ ছেলে সন্তান। আর পুরুষের এক্স ক্রোমোজোম যদি মহিলাদের যে কোন একটি ক্রোমোজোমের সঙ্গে নিষেধ ঘটাট তাহলে শিশুটির লিঙ্গ হবে ,(x,x) ।

এক্ষেত্রে লিঙ্গ টি হবে মেয়ে। কন্যা সন্তান জন্ম নেবে। কারণ মহিলাদের দুইটি সেক্স ক্রোমোজোমই এক এজন্য মানব শিশুর লিঙ্গ নির্ধারণে মহিলাদের কোন অবদান নেই। এটাতে সম্পূর্ণ অবদান রাখে একজন পুরুষ।
তাহলে আমরা বুঝতে পেরেছি যে কিভাবে একটি মানব সন্তানের লিঙ্গ নির্ধারণ করা হয়।

মানব শিশুর লিঙ্গ নির্ধারণে পুরুষের অবদান থাকলেও এতে ইচ্ছা বসত কিছুই হয় না। কিছুই নিজের অজান্তে ঘটে থাকে। তাই কিভাবে একটি পুত্র সন্তানের জন্ম দেওয়া যায় এর কোন বৈজ্ঞানিক উপায় এখনো আবিষ্কৃত হয়নি। তাই পুত্র সন্তান জন্মানোর জন্য কোন ধরনের ঔষধ পাওয়া যায় না। কিন্তু বাজারে বিভিন্ন অসাধু ব্যবসায়ীরা এ ধরনের ঔষধ বিক্রি করে মানুষকে প্রতারণার স্বীকার করছে।তাই প্রিয় বন্ধুগণ আপনারা এই সকল ঔষধ সেবন থেকে বিরত থাকুন কারণ কিভাবে মানব শিশুর লিঙ্গ নির্ধারণ হয় সে সম্পর্কে আমরা জানতে পেরেছি।

মানুষের অন্ধ বিশ্বাস দূর করে মানুষকে সচেতন করে তুলতে হবে। বৈজ্ঞানিক যুক্তি দিয়ে সবাইকে বোঝাতে হবে যে কুসংস্কার এবং অন্ধবিশ্বাস মানুষের নিতান্তই ভুল ধারণা। এজন্য এই সকল বিষয়ে সবার প্রাথমিক জ্ঞান থাকা খুবই আবশ্যক।

Leave a Comment