এই কবিতাটির নাম হল “ছাড়পত্র”। এবং এই কালজয়ী কবিতাটি লিখেছেন সুকান্ত ভট্টাচার্য। আমরা জানি এই ক্ষণজন্মা কবি প্রকৃতিকে নিয়ে চিত্র তুলে ধরেছেন তার কবিতার মাধ্যমে। সুকান্ত ভট্টাচার্য বিভিন্ন ধরনের কবিতা লিখেছেন এবং তার কবিতাগুলি সবগুলোই সমাজ সংস্কারক মূলক কবিতা। সব কবিতাগুলোই পৃথিবীকে বাসযোগ্য করার মতো কবিতা পৃথিবীর যত জঞ্জাল রয়েছে সব জঞ্জাল কে সরিয়ে ফেলার জন্য তিনি আহ্বান ডেকেছেন নতুনদের কাছে। সুকান্ত ভট্টাচার্য খুব অল্প বয়সেই লেখা শুরু করেছিলেন এবং এই ক্ষণজন্মা কবি দুরারোগ্য রোগে আক্রান্ত হয়ে অল্প বয়সেই তিনি পৃথিবী ছেড়ে চলে যান।
তিনি যদি বেশি দিন বাঁচতেন হয়তো আমাদের এই পৃথিবীকে এই বাংলা সাহিত্য কে আরো অনেক কিছু দিয়ে যেতে পারতেন। তার অল্প বয়সের মধ্যেই তিনি বাংলা সাহিত্যকে যা দিয়েছেন তা অবশ্যই মনে রাখার মত বলেই মনে করা হয়। অর্থাৎ তার জীবনে যেটুকুন দিয়েছেন বাংলা সাহিত্যে সেটুকুন সেই মৌলিক কবিতা অর্থাৎ এই সুকান্ত ভট্টাচার্যের কবিতার মত আর কবিতা দুই একটি কবি লিখে যেতে পারেনি। সুকান্ত ভট্টাচার্যের জন্ম ১৫ই আগস্ট ১৯২৬ সালে। তিনি ছিলেন বাংলার সাহিত্যের মার্কসবাদী ভাবধারায় বিশ্বাসী এবং প্রগতিশীল চেতনার অধিকারী তরুণ কবি। এই কবি পৃথিবীতে খুবই অল্প সময় অবস্থান করেছেন অর্থাৎ তিনি মাত্র 21 বছর বয়সেই পৃথিবী ছেড়ে চলে যান।
অল্প বয়সে পৃথিবী ছেড়ে চলে গেলেও খুব অল্প সময়ের মধ্যেই এই কবি প্রত্যাশচার্য খ্যাতি অর্জন করেন বাংলা সাহিত্যের কবিতা রচনা করে। অল্প বয়সী অত্যাশ্চর্য তরুণ কোভিদ জন্ম হয় 15ই আগস্ট ১৯২৬ সালে কালীঘাট কলকাতা বেঙ্গল প্রেসিডেন্সি ব্রিটিশ ভারতে। যেহেতু তিনি স্বাধীনতার পূর্বে অর্থাৎ যখন ব্রিটিশ ভারত ব্রিটিশরা এই ভারতকে শাসন করছিল তাই তার জাতীয়তা ব্রিটিশ ভারতীয় বলে ধরা হয়।
তিনি এই একুশ বয়সের মধ্যেই যে কয়টি কবিতা লিখেছেন তার লেখা সব কয়টি কবিতায় অত্যন্ত ঝাঁঝালো এবং মার্কসবাদী ভাবধারা প্রত্যেকটি মানুষের কথা বলে শুষনের বিরুদ্ধে কথা বলে। এই কবি মৃত্যুবরণ করেন ১৩ই মে ১৯৪৭ সালে অর্থাৎ স্বাধীনতার প্রাক্কালে এই ক্ষণজন্মা কবি মৃত্যুবরণ করেন। পশ্চিমবাংলার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য এই ক্ষণজন্মা তরুণ কবি সুকান্ত ভট্টাচার্যের ভাতুষ্পুত্র ছিলেন। তার উল্লেখযোগ্য রচনাবলীর মধ্যে বলা যায় যে, ছাড়পত্র ১৯৪৭, পূর্বাশ ১৯৫০, এবং ঘুম নেই ১৯৫০ সালে প্রকাশিত হয়।
তবে এই ক্ষণজন্মা কোভিদ পৈত্রিক বাড়ি ছিল আমাদের বাংলাদেশের গোপালগঞ্জ জেলার কোটালীপাড়া উপজেলার অন্তর্গত ঊনশিয়া গ্রামে। আজকে আমরা যে সারমর্ম দেখতে এসেছি তা এই কোভিদ ছাড়পত্র কবিতার। এখন আমাদের সবার আগে দেখে নিতে হবে যে এই ছাড়পত্র কবিতাটি আসলে কেমন বা কি বলতে চেয়েছেন কবি এই কবিতার মধ্যে দিয়ে। তাহলে আমরা এই ছাড়পত্র কবিতাটি সবার পূর্বে দেখে নিতে পারি। চলুন তাহলে
ছাড়পত্র (সুকান্ত ভট্টাচার্য)
এসেছে নতুন শিশু, তারে ছেড়ে দিতে হবে স্থান
জীর্ণ পৃথিবীতে ব্যর্থ, মৃত আর ধ্বংসস্তুপ- পিঠে
চলে যেতে হবে আমাদের।
চলে যাব- তবু আজ যতক্ষণ দেহে আছে প্রাণ
প্রাণপণে পৃথিবীর সরাবাে জঞ্জাল,
এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযােগ্য করে যাব আমি
নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
বিভিন্ন জায়গাতেই অর্থাৎ বিভিন্ন প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষা থেকে শুরু করে ক্লাসের পরীক্ষা বা অন্য যে কোন পরীক্ষায় এই কবিতাটির সারমর্ম লিখতে আসে আমাদের। তাই আমরা আজকে দেখব যে এই কবিতাটি সারমর্ম আসলে কি এবং কেমন হতে পারে। আপনারা জানেন যে কোন কবিতার অথবা যে কোন লেখার সারমর্ম লিখতে হলে আমাদেরকে অবশ্যই সেই
কবিতাটির লাইন গুলো ভালোভাবে জেনে নিতে হয়। যদি আমরা সেই কবিতা লাইনগুলো ভালোভাবে না বুঝি যে কি বলতে চেয়েছে তাহলে কখনোই আমরা সারমর্ম বলতে পারব না বা বোঝাতে পারবো না। তাই এই কবিতার ক্ষেত্রেও তাই আজকে আমরা প্রথমে কবিতাটি দেখে নিলাম এখন লিখব যে কিভাবে সারমর্ম লেখা যায়।
সারমর্ম: যেকোনো পুরাতনকে অবশ্যই জায়গা ছেড়ে দিতে হয় নতুনদের জন্য। আর নতুনদের জন্য বা আগামী প্রজন্মকে এই পৃথিবীর বাসযোগ্য করার জন্য আমাদের যত ধরনের জঞ্জাল কুসংস্কার আছে সেই সকল জঞ্জাল বা কুসংস্কারকে পরিষ্কার করে তাদের বাসযোগ্য করা আমাদের সকলের কর্তব্য। আর নতুন শিশুরা যেহেতু আগামী দিনের ভবিষ্যৎ এই কারণে তাদেরকে অবশ্যই আমরা জায়গা করে দেব।