বর্তমানে যে কোন ফসল উৎপাদন করার জন্য বিভিন্ন ধরনের কীটনাশক ব্যবহার করতে হয়। বর্তমান সময়ে এমন কোন ফসল নেই যে ফসলের জনক কীটনাশক ব্যবহার করা হয় না। আপনি বাজারে সুন্দর শাক বা সবজি দেখেন সাজিয়ে রাখা হয়েছে। কিন্তু এই সকল সুন্দর শাক-সবজি তৈরি করতে কৃষককে কত পরিমান কীটনাশক প্রয়োজন হয়েছে তা হয়তো আপনি কল্পনাও করতে পারবেন না। কারণ হলো বর্তমান সময়ে এমন কোন শাকসবজি বা কৃষিজ ও ফসল নেই যা ২০ বা কীটনাশক ছাড়া তৈরি করা সম্ভব। পূর্বে অর্থাৎ প্রায় ৪ দশক পূর্বেও দেখা গিয়েছে ধানের জন্য তেমন কোন ঔষধ বা
কীটনাশক ব্যবহার করা হতো না। তবে সেই সময় বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই আমাদের দেশীয় যে ধান ভিজ ছিল সেই দেশীয় ধান বীজের দ্বারা ধান উৎপাদন করা হতো। অর্থাৎ উচ্চ ফলনশীল ধানগুলো তখন খুব বেশি ভাবে প্রচারে আসেনি। তখন যে ধান গম বা বিভিন্ন ধরনের ডাল জাতীয় ফসল তৈরি করা হতো তখন এত পরিমানের কীটনাশক দিতে হতো না। বর্তমানে কৃষি কাজ করার জন্য আমরা বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই উচ্চফলনশীল জাতগুলো ব্যবহার করে থাকি। আর এই উচ্চ ফলনশীল জাতগুলো বেশি পরিমাণে বপন করার ক্ষেত্রে আমরা অধিক যত্নবান হয়ে থাকে।
আর অধিক যত্নবান হতে হলে অবশ্যই বিভিন্ন কীটনাশক ঔষধ ব্যবহার করতে হয় কারণ কিছুদিন পরপরই দেখা যায় যে বিভিন্ন ধরনের পোকামাকর ফসল কে আক্রমণ করছে। ফসলের আক্রমণ থেকে রক্ষা করার জন্য ফসলে কীটনাশক ব্যবহার করতে হয়। তেমনি ভাবে ধান রোপন করার পর থেকে বিভিন্ন পোকামাকড়ের যেহেতু আক্রমণ ঘটে থাকে তাই এ সকল পোকামাকড় থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য দর্শন একদিন থেকে শুরু করে ধান পাকা পর্যন্ত বিভিন্ন সময় কীটনাশক
ঔষধ সেটাতে হয়। এবং যেহেতু বিভিন্ন সময় বিভিন্ন ধরনের কিটের বা পোকামাকড়ের আক্রমণ হয় তাই এই সকল আলাদা আলাদা পোকামাকড় বা কীটপতঙ্গর আক্রমণ ঠেকানোর জন্য আমাদের অবশ্যই আলাদা আলাদা কীটনাশক ব্যবহার করতে হয়। কারণ বর্তমানে দেখা গিয়েছে যে পোকামাকড় বা কীট পতঙ্গ গুলো অনেক শক্তিশালী হয়েছে। তাই তাদের আক্রমণ থেকে ফসল কে রক্ষা করার জন্য আমাদের অবশ্যই নির্দিষ্ট কীটনাশকের প্রয়োজন হয়।
আপনারা হয়তো একটু খেয়াল করলে দেখবেন যে একটা সময় ছিল যখন মশা তাড়ানোর জন্য বাড়িতে তৈরি বিভিন্ন ধরনের কাঠ শুকনো গোবর বা ধানের লাগাবা আগাছা দিয়ে তৈরি করা বন্দী জাতীয় কিছু ধরিয়ে দিলে মশা আর থাকত না। কিন্তু বর্তমান সময় খেয়াল করে দেখবেন যে উচ্চমানের বা উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন কয়েল গুলো ব্যবহার করেও মশাকে তাড়ানো সম্ভব হচ্ছে না। তাই প্রচুর পরিমাণে ডিম ডেঙ্গু রোগের দেখা যাচ্ছে আমাদের আশেপাশে। তেমনি ভাবে ধানের যখন দুধ
আসে অর্থাৎ ধান ভোর থেকে ভুলে বের হয় এবং তার কিছুদিনের মধ্যে ধানের মধ্যে চাল হওয়ার জন্য দুধের সৃষ্টি হয়ে থাকে। আর এই সময় বিভিন্ন ধরনের কীটপতঙ্গের আক্রমণ হয় সেই দুধ খাওয়ার জন্য। এবং এই দুধ যদি তারা খেয়ে ফেলে তাহলে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে দেখা যায় যে ধানের চিটা হচ্ছে। তাই আজকে আমরা দেখাবো যে এই সময় কার প্রকার আক্রমণ থেকে আপনারা কোন ধরনের কীটনাশক ব্যবহার করতে পারেন। এবং যারা আক্রমণ করছে তারা কোন ধরনের পতঙ্গ এ সকল বিষয় সম্পর্কে আপনাদেরকে এখন জানাবো।
আপনারা হয়তো বুঝতেই পারবেন ধানের দুধ সৃষ্টি হওয়ার সময় কোন পোকা গুলো আক্রমণ করে থাকে। এ সকল কীটপতঙ্গ গুলোর বা পোকা গুলোর নাম চিকিৎসা বিজ্ঞানে বলা হয়ে থাকে যে নামগুলো তাহলো- মাজরা পোকা, পামরি পোকা, গান্ধি পোকা, চুঙ্গী পোকা। এই পোকা গুলোই দেখা যায় যে যখন ধান গাছে থোর থেকে ধানের শীষ বের হয় তখন ধানের দুধ আসলে তারা আক্রমণ করে বসে। তাহলে আপনারা অবশ্যই বিষয়টি বুঝে নিতে পারলেন যে প্রশ্ন করে আজকে এসেছিলেন সেই প্রশ্নের উত্তর অবশ্যই পেয়েছেন বলে মনে করি।