দুনিয়ার জীবনে কি কাজ করেছে তার ওপরে নির্ভর করে একটা মানুষকে মৃত্যুর পরবর্তী জীবনের শাস্তি অথবা পুরস্কার প্রদান করা হবে। প্রকৃতপক্ষে আল্লাহপাকের বিশাল নেয়ামত রহমতের মধ্য দিয়ে আমরা নিজেদের জীবনকে পরিচালনা করলেও ঠিকঠাক মতো ইবাদত করি না অথবা আল্লাহ পাকের দেখানো পথ থেকে আমরা দূরে সরে যাই। তাই মৃত্যুর পর আপনি যদি ওই কবরের আজাবকে ভয় পেয়ে থাকেন এবং কবরের আজাব যদি আপনার মনের ভেতরে বারবার ভয়ের সৃষ্টি করে তাহলে আজাব থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য দোয়া করতে পারেন। তাই কবরের আজাব থেকে মুক্তি পাওয়ার দোয়া সম্পর্কিত তথ্য এখানে উপস্থাপন করা হলো।
মৃত প্রত্যেকটা মানুষের জন্য অবধারিত এবং প্রত্যেকটি জীবকে মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করতে হবে। এই পৃথিবীতে আপনি যেখান থেকে এসেছেন ঠিক সেখানেই আবার ফিরে যাবেন মাঝখানে আপনি দুনিয়ার জীবনে কি করেছেন সেটার হিসাব নিকাশ হবে। তাই আমরা দুনিয়ার জীবনে যারা মত্ত হয়ে উঠেছে এবং দুনিয়ার জীবনের ভোগলালসার জন্য যারা মূল্যবান সময় ইবাদত না করে অন্যান্য কাজে কাটিয়ে দিচ্ছি তাদের ভয়াবহ পরিস্থিতি সৃষ্টি হচ্ছে। তাই আমরা দুনিয়ার জীবনে এমন কিছু আমল করতে পারি যেটার মাধ্যমে খুব সহজেই কবরের আজাব থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে।
প্রকৃতপক্ষে এই পৃথিবীতে জন্মগ্রহণ করার পর আমরা নিশ্বাস প্রশ্বাস গ্রহণ করছে একমাত্র আল্লাহ পাকের প্রদান করা নিয়ামতের মাধ্যমে। খাদ্যগ্রহণ থেকে শুরু করে প্রত্যেকটি কাজে আল্লাহ পাক যদি আমাদের সাহায্য না করেন তাহলে আমাদের একবিন্দু নড়েচড়ে বসার শক্তি নেই। তাই আল্লাহপাক আমাদের যে সুন্দর নিয়ামত দান করেছেন তার জন্য অবশ্যই আমাদের পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ এবং অন্যান্য যাবতীয় ইবাদতে অংশগ্রহণ করা উচিত। কিন্তু দুনিয়ার জীবনে আমরা বেশ ব্যস্ত হয়ে উঠেছি এবং যে কাজে ব্যস্ত হয়েছি সে কাজ দুনিয়ার জীবনের প্রয়োজন মিটানো ছাড়া আর কোন কাজে আসবেনা।
আবার কিছু কিছু মানুষ আল্লাহপাকের ইবাদত করা ভুলে গিয়েছেন এবং এই ইবাদত থেকে এতটাই দূরে যে আল্লাহ পাকের সঙ্গে কোনো সম্পর্ক নেই। দুনিয়ার জীবনে যে সকল ভুল ভ্রান্তি করছে অথবা যে সকল পাপের সঙ্গে জড়িত রয়েছেন সেই সকল পাপ থেকে আমাদেরকে অবশ্যই মুক্ত হতে হবে। খুব সহজ কথায় বলতে গেলে আপনাকে যদি প্রশ্ন করা হয় আপনি কি জাহান্নামে যেতে চান তাহলে আপনার উত্তর হবে না। কিন্তু জাহান্নাম থেকে বাঁচার জন্য আমরা যদি আগে থেকেই পূর্ব প্রস্তুতি গ্রহণ না করি তাহলে দুনিয়ার পরীক্ষায় ফেল করব।
প্রস্তুতি গ্রহণ ছাড়া যেমন পরীক্ষার কেন্দ্রে গিয়ে আমরা খুব একটা ভালো নম্বর অর্জন করতে পারিনা অথবা অনেক সময় অকৃতকার্য হই তেমনি ভাবে আপনি যদি আল্লাহপাকের দেখানো পথে নিজেদের জীবনকে পরিচালনা না করেন তাহলে মৃত্যু পরবর্তী জীবনে আপনি শাস্তি হিসেবে জাহান্নামে নিক্ষেপিত হবেন। তাই আমাদেরকে সকল কাজে বিবেচনা করতে হবে এবং কৃতজ্ঞতার জায়গা থেকে ও বাধ্যতামূলক করে দেওয়া হয়েছে বলে প্রত্যেকটি ইবাদতের শরিক হতে হবে।
মহান আল্লাহপাক আমাদের প্রত্যেকটি কাজের হিসাব নেবেন বলে আমাদের ভেতরে তাকওয়া থাকতে হবে যে আমাদের প্রত্যেকটি কাজ আল্লাহ পাক দেখছেন এবং সেটা হিসাব করে রাখছেন। আমাদের আমলনামা অনুযায়ী যদি সেটা খারাপের দিকে যায় তাহলে আমাদেরকে জাহান্নামে যেতে হবে এবং সেখানে আমাদের জন্য নিদারুন শাস্তি ও কষ্ট অপেক্ষা করছে। তাই আমরা সব সময় আল্লাহ পাকের স্মরণ করব এবং আল্লাহ পাক আমাদের যে সকল নিয়ামত দিয়েছেন সেগুলোর শুকরিয়া আদায় করার পাশাপাশি প্রত্যেকটি ইবাদতে নিজেদের যাবতীয় কাজ একপাশে রেখে সম্পন্ন করব।
দুনিয়ার জীবন শেষ হয়ে যাওয়ার সাথে সাথে আপনি যখন মৃত্যুবরণ করবেন তখন আপনাকে পরিবারের সদস্য অথবা এলাকাবাসী কবরে রেখে আসবে। দুনিয়ার জীবনে যদি আপনি ভাল কাজ না করেন অথবা আল্লাহ পাকের ইবাদত না করেন তাহলে কবরে যে ফেরেশতা আসবে তাদের প্রশ্নের উত্তর প্রদান করতে পারবেন না। তাই সকল দিক বিবেচনা করে দুনিয়ার জীবনকে প্রাধান্য না দিয়ে আখেরাতের জীবনকে প্রাধান্য দিন এবং কবরের জীবনে কি উত্তর দিবেন সেটার জন্য প্রস্তুত থাকুন। আর যারা কবরের আজাব থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য দোয়া পেতে এসেছেন তাদের উদ্দেশ্যে আমরা এই দোয়া দিয়ে দিলাম।