এপিজে আবদুল কালাম ছিলেন একজন বিজ্ঞানী। ভারতীয় এই বিজ্ঞানী ভারতের বিজ্ঞানের বিষয়কে একেবারে উন্নতির স্বর্ণ শিখরে নিয়ে গেছেন। পরবর্তী জীবনে এই বিজ্ঞানী এপিজে আব্দুল কালাম তার সততা এবং নিষ্ঠার কারণে ভারতের রাষ্ট্রপতি পদে আসীন হন। এপিজে আবদুল কালাম এর পুরো নাম হল- আভুল পাকির জয়নুলাবেদিন আবদুল কালাম । এই এই মহাপুরুষের জন্ম ১৫ই অক্টোবর ১৯৩১ সালে। তিনি একজন ভারতীয় পরমাণু বিজ্ঞানী ছিলেন যিনি ভারতীয় প্রজাতন্ত্রের আবার একাদশ রাষ্ট্রপতি হিসেবেও তিনি দায়িত্ব পালন করে অত্যন্ত নিষ্ঠার সহিত।
আর এই কারণে এই পরমাণু বিজ্ঞানী বা ভারতীয় রাষ্ট্রপতিকে ভারতের প্রতিটি মানুষ অত্যন্ত শ্রদ্ধার সহিত এখন পর্যন্ত স্মরণ করে থাকেন। এই মহাপুরুষ অর্থাৎ এপিজে আবদুল কালাম ভারতের একাদশ রাষ্ট্রপতি হিসেবে ২০০২ সাল থেকে ২০০৭ সাল পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন। এই বিখ্যাত ব্যক্তির জন্ম হয় বর্তমান ভারতের তামিলনাড়ু রাজ্যের রামেশ্বরমে। এই বিজ্ঞানী পদার্থবিদ্যা বিষয়ে সেন্ট এসএসএফ কলেজ থেকে এবং বিমান প্রযুক্তিবিদ্যা বিষয় নিয়ে মাদ্রাজ ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি থেকে পড়াশোনা করেছিলেন।
তিনি ভারতীয় ভাগ্যবিধাতায় অনেক বছর অনেক জায়গায় সততার সহিত তিনি তার কর্ম করে যান। সততা এবং নিষ্ঠার কারণেই এই ভারতীয় পরমাণু বিজ্ঞানী কে ভারতবাসী তাদের চোখের মনি কোঠায় স্থান দিয়েছেন। মূলত ৪০ বছর তিনি রক্ষা অনুসন্ধান ও বিকাশ সংগঠন ও ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা অর্থাৎ যার নাম আসলো এই প্রতিষ্ঠানে প্রশাসক হিসেবে কাজ করেছেন। ইসরোর কথা বললে বর্তমান বিশ্ব এখন ইন্ডিয়া এবং ইসরো কে একই নামে চিনে থাকে। ভারতের
অসামরিক মহাকাশ কর্মসূচি ও সামরিক সুসংহত নিয়ন্ত্রিত ক্ষেপণাস্ত্র উন্নয়নে তিনি গভীরভাবে বা এই কর্মসূচির সঙ্গে তিনি গভীরভাবে যুক্ত ছিলেন। বালিসটিক ক্ষেপণাস্ত্রের কর্মসূচির সঙ্গে তিনি যুক্ত ছিলেন বলে জানা যায়। এই কারণে এই এপিজে আব্দুল কালাম বিভিন্ন সময় ভারতীয়দের কাছে বিভিন্ন রকম জ্ঞান-বিজ্ঞানের উপদেশ দিয়ে গেছেন। এই জ্ঞান বিজ্ঞানের উপদেশগুলো আমরা এখন পর্যন্ত শ্রবণ করি এবং তার কথা মেনে চলার চেষ্টা করি। বর্তমান সামাজিক যোগাযোগে এই এপিজে আবদুল কালাম এর বিভিন্ন ধরনের উন্নয়নমূলক বা বিভিন্ন বাণী প্রচার করা হয়।
তার জীবনে আমাদের প্রেরণার উৎস হিসেবে কাজ করে। এজন্য এপিজে আবদুল কালামকে আমরা প্রাণভরে স্মরণ করি বিভিন্ন সময়। তাহলে চলুন আমরা এখন এই এপিজে আবদুল কালাম এর বিভিন্ন সময় বিভিন্ন যে উক্তিগুলি রয়েছে সেই উক্তিগুলি সম্পর্কে আমরা এখন দেখে নিতে পারি। অর্থাৎ আমাদের জীবন যাপনের উপর বা আমাদের জীবন যাপনকে উদ্দেশ্য করে বিজ্ঞানী এপিজে আবদুল কালাম অনেক বাণী উক্তি ইত্যাদি করে গেছেন। আমরা এখন এই সকল বাণী এবং উক্তিগুলো সম্পর্কে জানব। তাহলে চলুন দেখে নেই বাণী উক্তিগুলো।
“একটি ভালো বই একশ ভালো বন্ধুর সমান, কিন্তু একজন ভালো বন্ধু একটি লাইব্রেরির সমান”।
এখানে তিনি একটি ভালো বইকে ভালো বন্ধুর সমান উপাধি দিয়েছেন। একটি ভালো বই সব সময় মানুষকে সামনের সুন্দর পথ দেখাতে পারে। তাই আমাদের ভালো বইয়ের কোন বিকল্প নেই। পরের উক্তি দেখলে দেখতে পাই যে,
“সফলতার গল্প পড়ো না, কারণ তা থেকে তুমি শুধু গল্পটাই পাবে। ব্যর্থতার গল্প পড়ো, তাহলে সফল হওয়ার কিছু উপায় পাবে”।
১. একটি ভালো বই একশ ভালো বন্ধুর সমান, কিন্তু একজন ভালো বন্ধু একটি লাইব্রেরির সমান।
২. সফলতার গল্প পড়ো না, কারণ তা থেকে তুমি শুধু গল্পটাই পাবে। ব্যর্থতার গল্প পড়ো, তাহলে সফল হওয়ার কিছু উপায় পাবে।
৩. স্বপ্ন পূরণ না হওয়া পর্যন্ত স্বপ্ন দেখে যাও। স্বপ্ন সেটা নয় যা তুমি ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে দেখো, স্বপ্ন হলো সেটাই যা তোমাকে ঘুমোতে দেয় না।
৪. মানুষ তার ভবিষ্যত পরিবর্তন করতে পারে না, কিন্তু অভ্যাস পরিবর্তন করতে পারে। অভ্যাসই মানুষের ভবিষ্যত পরিবর্তন করে দেয়।
৫. তুমি যদি সূর্যের মতো আলো ছড়াতে চাও, তাহলে আগে সূর্যের মতো পুড়তে শেখো।
৬. উদার ব্যক্তিরা ধর্মকে ব্যবহার করে বন্ধুত্বের হাত বাড়ান। কিন্তু সংকীর্ণমনস্করা ধর্মকে যুদ্ধের অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করে।
৭. নেতা সমস্যায় ভয় পান না। বরং সমস্যার মোকাবিলা করতে জানবেন। তাকে কাজ করতে হবে সততার সঙ্গে।
৮. জাতির সবচেয়ে ভালো মেধা ক্লাসরুমের শেষ বেঞ্চ থেকে পাওয়া যেতে পারে।
৯. ছাত্রজীবনে আমি বিমানের পাইলট হতে চেয়েছিলাম। কিন্তু সেই স্বপ্ন পূরণে ব্যর্থ হয়েছি, হয়ে গেছি রকেট বিজ্ঞানী।
১০. জীবন ও সময় পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ শিক্ষক। জীবন শেখায় সময়কে ভালোভাবে ব্যবহার করতে আর সময় শেখায় জীবনের মূল্য দিতে।
১১. কঠিন কাজে আনন্দ বেশি পাওয়া যায়। তাই সফলতার আনন্দ পাওয়ার জন্য মানুষের কাজ কঠিন হওয়া উচিত।
১২. প্রথম সাফল্যের পর বসে থেকো না। কারণ দ্বিতীয়বার যখন তুমি ব্যর্থ হবে তখন অনেকেই বলবে প্রথমটিতে শুধু ভাগ্যের জোরে সফল হয়েছিলে।
১৩. যারা মন থেকে কাজ করে না, তারা আসলে কিছুই পায় না। আর পেলেও সেটা হয় অর্ধেক হৃদয়ের সফলতা। তাতে সব সময়ই একরকম তিক্ততা থেকে যায়।
১৪. তরুণ প্রজন্মের কাছে আমার বার্তা হলো- তাদের ভিন্নভাবে চিন্তা করবার সাহস থাকতে হবে। মনের ভেতর আবিষ্কারের তাড়না থাকতে হবে। নিজের সমস্যা নিজে মেটাবার মানসিকতা থাকতে হবে।
১৫. বৃষ্টি শুরু হলে সব পাখিই কোথাও না কোথাও আশ্রয় খোঁজে। কিন্তু ঈগল মেঘের ওপর দিয়ে উড়ে বৃষ্টিকে এড়িয়ে যায়।
১৬. আমি সুপুরুষ নই। কিন্তু যখন কেউ বিপদে পড়েন আমি সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিই। সৌন্দর্য থাকে মানুষের মনে, চেহারায় নয়।
১৭. কাউকে হারিয়ে দেয়াটা খুব সহজ, কিন্তু কঠিন হলো কারো মন জয় করা।
১৮. তুমি যদি তোমার কাজকে স্যালুট করো, দেখো তোমাকে আর কাউকে স্যালুট করতে হবে না। কিন্তু তুমি যদি তোমার কাজকে অসম্মান করো, অমর্যাদা কর, ফাঁকি দাও, তাহলে তোমার সবাইকে স্যালুট করতে হবে।
১৯. প্রতিদিন সকালে এই পাঁচটা লাইন বলো:
১) আমি সেরা
২) আমি করতে পারি
৩) সৃষ্টিকর্তা সব সময় আমার সঙ্গে আছে
৪) আমি জয়ী
৫) আজ দিনটা আমার
২০. তিনজনই পারেন একটি দেশ বা জাতিকে বদলাতে। তাঁরা হলেন, বাবা, মা ও শিক্ষক।
২১. জীবনে সমস্যার প্রয়োজন আছে। সমস্যা আছে বলেই সাফল্যে এতো আনন্দ।
২২. যে হৃদয় দিয়ে কাজ করে না, শূন্যতা ছাড়া সে কিছুই অর্জন করতে পারে না।
২৩. ফেল করে হতাশ হয়ো না। ইংরেজি শব্দ ফেল ‘Fail’ মানে ‘First Attempt in Learning’ অর্থাৎ ‘শেখার প্রথম ধাপ’। বিফলতাই তোমাকে সফল হবার রাস্তা দেখিয়ে দেবে।
২৪. সেই ভালো শিক্ষার্থী যে প্রশ্ন করে। প্রশ্ন না করলে কেউ শিখতে পারে না। শিক্ষার্থীদের প্রশ্ন করার সুযোগ দিতে হবে।
২৫. সমাপ্তি মানেই শেষ নয়। ‘END’ শব্দটির মানে হচ্ছে ‘Effort Never Dies’ অর্থাৎ ‘প্রচেষ্টার মৃত্যু নেই’।
২৬. আমরা শুধু সাফল্যের উপরেই গড়ি না, ব্যর্থতার উপরেও গড়ি।
২৭. একজন খারাপ ছাত্র একজন দক্ষ শিক্ষকের কাছ থেকে যা শিখতে পারে তার চেয়ে একজন ভালো ছাত্র একজন খারাপ শিক্ষকের কাছ থেকে অনেক বেশি শিখতে পারে।
২৮. উপরে তাকিয়ে আকাশটাকে দেখো। তুমি একা নও, এই মহাবিশ্ব তোমার বন্ধুর মতোই।
২৯. কোনো একটা প্রশ্নের উত্তর খুঁজে পাচ্ছো না! চিন্তিত করো না- ‘NO’ শব্দের মানে হচ্ছে ‘Next Opportunity’ অর্থাৎ ‘পরবর্তী সুযোগ’।
৩০. স্বপ্ন, স্বপ্ন, স্বপ্ন। স্বপ্ন দেখে যেতে হবে। স্বপ্ন না দেখলে কাজ করা যায় না।
যে সকল মানুষ সফল হয়েছে সে সকল মানুষের গল্প না পড়ে যে সকল মানুষ জীবনযুদ্ধে পরাজিত হয়েছে বিফল হয়েছে তাদের গল্প বললে আমাদের আরো সেখান থেকে অনেক কিছু শিখতে পারবো। কারণ তারা কিভাবে বিফল হয়েছে সেই ধাপগুলো আমরা কিভাবে অতিক্রম করতে পারি সেই কথাটা যদি মনে থাকে তাহলে অবশ্যই আমরা বিষয়গুলি দেখে নিতে পারব। এভাবে যে উক্তিগুলি করেছেন পরের উক্তিগুলো সম্পর্কে আমরা এখন আবার দেখতে থাকব।
“স্বপ্ন পূরণ না হওয়া পর্যন্ত স্বপ্ন দেখে যাও। স্বপ্ন সেটা নয় যা তুমি ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে দেখো, স্বপ্ন হলো সেটাই যা তোমাকে ঘুমোতে দেয় না”।স্বপ্ন আমাদের বাস্তবায়ন করতে হলে অবশ্যই স্বপ্ন দেখতে হবে এবং সেই স্বপ্ন অবশ্যই জেগে দেখতে হবে ঘুমিয়ে নয়।