যারা অতিরিক্ত কথা বলেন তাদের উদ্দেশ্যে আমরা এখানে কম কথা বলা নিয়ে কিছু উক্তি প্রদান করলাম যেটার মাধ্যমে নিজের ব্যক্তিত্ব বজায় রাখতে পারবেন। আমাদের সমাজে এমন কিছু মানুষ রয়েছে যারা সব সময় কথা দিয়ে আশেপাশের মানুষকে পাগল করতে চাই অথবা কথা দিয়ে সেই পরিবেশকে মুগ্ধ করতে চাই। কিন্তু অতিরিক্ত কথা বলা মানেই যে সেখানে অনেক ভালো কথা বলছে অথবা গুরুত্বপূর্ণ কথা বলছে বিষয়টা এমন নয়। আপনি যদি কোন কাজের কথা অল্প কথাতে ছাড়তে পারেন তাহলে সেই কথার মধ্যে ভারত্ব থাকবে এবং সেই কথার মাধ্যমে অন্যরা প্রভাবিত হবে। তাই আপনাদের উদ্দেশ্যে নিচের দিকে কম কথা বলা নিয়ে কিছু গুরুত্বপূর্ণ উক্তি প্রদান করা হলো।
অনেকজন মানুষের মাঝে বসে আছেন এবং তারা যখন আপনাদের উদ্দেশ্যে বিভিন্ন ধরনের কথা বলছে তখন হয়তো আপনারাও তাল মিলানোর জন্য অনেক কথা বলে ফেলছেন। কিন্তু আপনি যখন একটা জায়গায় প্রয়োজনের চাইতে অতিরিক্ত কথা বলবেন তখন আপনার নিজের ব্যক্তিত্ব নষ্ট হবে অথবা আপনি যে বাচাল টাইপের ব্যক্তি তা বলে সকলের কাছে প্রমাণিত হবে। তাই নিজেকে যদি অন্যদের মাঝে মূল্যবান হিসাবে বিবেচনা করতে চান অথবা অন্যদের থেকে যদি সম্মান পেতে চান তাহলে কাজের কথা বলুন।
আর যখন আপনারা গুরুত্বপূর্ণ কথাগুলো বলবেন তখন দেখা যাবে যে সকলে আপনার কথাকে মূল্যায়ন করছে এবং আপনি যে ব্যক্তিত্ব বজায় রেখেছেন সেটা সবাই প্রাধান্য দিবেন। আমরা যদি মুসলিম ধর্মের অনুসারী হয়ে থাকি তাহলে বলবো যে আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাঃ অধিকাংশ সময় চুপ থাকতেন এবং কাজের সময় প্রয়োজনীয় কথা বলতেন। তাই কোন একটা জায়গায় বসে আছেন এবং সেখানে যদি বন্ধুরা অহেতুক আড্ডা দিতে থাকে তাহলে সেই আড্ডাই হয়তো পথ যেতে প্রয়োজনীয় কথা গুলো বলুন।
এখন আপনার হয়তো মনে হতে পারে যে চুপচাপ থাকতে ভালো লাগে না অথবা কারো সাথে মন খুলে কিছু কথা বলতে পারলে খুব ভালো হয়। কিন্তু চুপচাপ থাকার মধ্য দিয়ে আপনি যখন সৃষ্টিকর্তার প্রতি ইবাদত করতে পারবেন অথবা বিভিন্ন ধরনের আমল করতে পারবেন তখন সেটা আপনার জন্য খুব ভালো হবে। তাই আপনারা নিয়মিত ভাবে যে সকল ব্যক্তিদের সঙ্গে চলাফেরা করছেন তাদের মধ্যে নিজের ভাব ধরে রাখার জন্য অথবা প্রয়োজনের বাইরে কথা না বলার জন্য যদি সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে থাকেন তাহলে খুব ভালো হয়।
প্রকৃতপক্ষে আপনি এই পৃথিবীতে জন্মগ্রহণ করেছেন এবং কাজের কথা বলা ছাড়া অন্যান্য পর্যায়ে যদি বিনোদন পেতে চান তাহলে সে ক্ষেত্রে সুস্থ বিনোদনের চর্চা করতে হবে। তাছাড়া আপনি যখন অতিরিক্ত কথা বলবেন তখন আপনার ভেতরে এক ধরনের বাচাল প্রবণতা চলে আসবে এবং অতিরিক্ত কথা বলার ফলে দেখা যাবে যে সেখানে অপ্রয়োজনীয় কথার কারণে বিভিন্ন ধরনের মনোমালিন্যের সৃষ্টি হচ্ছে। তাই আমরা সকলেই এ সকল বিষয়গুলো বিবেচনা করব এবং অতিরিক্ত কথা বলা থেকে বিরত থাকব।
আর যারা অতিরিক্ত কথা বলা বন্ধ করতে পারেন না তাদের উদ্দেশ্যে এখানে কম কথা বলা নিয়ে কিছু গুরুত্বপূর্ণ উক্তি প্রদান করা হলো যেটা আপনাদের জীবন পরিবর্তন করতে সাহায্য করবে। আর যদি জীবনে সফল হতে চান এবং অন্যের কাছে যদি প্রাধান্য পেতে চান তাহলে কম কথা বলার চেষ্টা করতে থাকুন। তবে কম কথা বলার মানে এই না যে প্রয়োজনের সময় আপনি চুপ করে থাকবেন এবং প্রয়োজনের সময় কথা বলার মাধ্যমেই আপনি আপনার মতামত গুরুত্বপূর্ণভাবে প্রকাশ করতে পারবেন।
- যে খুব বেশি কথা বলে থাকে সে পাপ করে থাকে। – তালমুদ
- বেফাস কথা বলার থেকে চুপ থাকাই নিরাপদ। – জর্জ হার্বার্ট
- অসৎ কথাবার্তা অপেক্ষা যৌনতা অবলম্বনে শ্রেয়। – ড্রাইডেন
- ভালো কথা খারাপ লোকে বললেও সেটা গ্রহণ করবে। – সক্রেটিস
- কথা শক্তিকে না জেনে মানুষকে জানাও অসম্ভব। – কনফুসিয়াস
- স্বল্পভাষী মানুষই সর্বোত্তম। – শেক্সপিয়ার
- যে কথা কম বলে তাকে বোঝা মুশকিল। – জন সিমসন
- অপ্রয়োজনীয় কথা বলার চেয়ে চুপচাপ থাকা ভালো। – দিনাহ ফ্রেইক
- কথা বেশি বলে দেখেই যে সে জানে এ ধারণা ভুল। – ও হেনরি
- বিশ্বস্ত কথার আছে শোক নিরাময়ের গুন। – মেনানডার
- কথা বলার পূর্বে চিন্তা করে দেখো সেটা বলা ঠিক হবে কিনা। – রাস্কিন
- যে সুন্দর ভাবে কথা গুছিয়ে বলতে জানে, না সে কিছুই জানে না। – ও হেনরি
- বেশি কথাই হচ্ছে সবচেয়ে ক্লান্তিকর। – জর্জ ডাব্লিউ লেজর
- কথা এবং সততাই চরিত্রের মেরুদন্ড। – স্কাইলাস
- কোন চিন্তাশীল ব্যক্তি অধিক কথা বলে। – মনটেস্ক
- কেউবা মরে কথা বলে কেউবা মরে না বলে। – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
- যত বেশি কথা বলবে অপরাধ তত বৃদ্ধি পাবে। – স্যার জন ড্যানহাম
- প্রত্যেকটি কথা ধৈর্য ধরে শোনা একটি ভালো অভ্যাস। – লুসিয়ার কাম
- চমৎকার মুখের মত কথার ও আছে নানা রঙ। – আর্নেস্ট রিস
- কথা কমিয়ে দাও কাজ আপনি ঠিক হবে। – লাউতেজ
উপরিউক্ত আলোচনার ভিত্তিতে আপনারা যখন কম কথা বলার চর্চা করার জন্য এখান থেকে বিভিন্ন ধরনের উক্তি পড়বেন তখন সেই উক্তিগুলো নিজেরা পড়ে নেওয়ার পাশাপাশি অন্যদের মাঝে শেয়ার করুন। কারণ আমাদের সমাজে এমন অনেক মানুষ রয়েছে যারা অতিরিক্ত কথা বলে নিজেকে বড় প্রমাণ করতে চাই এবং এই ক্ষেত্রে বড় প্রমাণ করতে গিয়ে নিজেরাই ছোট হয়ে যায়। তাই কম কথা বলাটাও এক ধরনের ইবাদত এবং এই বিষয়টা মাথায় রাখতে হলে আমাদের ওয়েবসাইটের প্রদান করা এই উক্তিগুলো করে দেখতে হবে।