ইসলামিক বক্তব্য অথবা ইসলামিক জালসা গুলির আয়োজন করা হয় ধর্ম প্রচার করার জন্য। আমরা সবাই এই বিরাট ইসলামিক জালসা গুলোর সঙ্গে পরিচিত। এইসব ইসলামিক ব্যক্তিত্বের অনুষ্ঠানে অনেক বক্তা বক্তব্য দিয়ে থাকেন। ধর্মীয় বিষয়ে জ্ঞান থাকতে হবে এবং একজন সৎ নিষ্ঠাবান মানুষ হতে হবে তাহলেই সফল বক্তা হওয়া সম্ভব। বক্তা যদি নিজে একজন অসৎ ব্যক্তি হয় তাহলে কখনোই জনগণের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে পারবে না। বক্তা যদি সম্পূর্ণ ভাবে যোগ্য না হয় তাহলে তিনি কখনোই দর্শকের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে পারবেন না। বক্তার কণ্ঠস্বর এবং তার ভাষা এতটাই মধুর হতে হবে যাতে আসরে বসা সকল জনগণ তার বক্তায় মুগ্ধ হয়ে যায়। সাংসারিক জীবনের সকল দুঃখ কষ্ট ভুলে সেই বক্তার ভাষণের মুগ্ধ হয়ে যায়। বক্তা হতে হবে এইরকম।
অনেকে আছে যারা জানতে চায় যে কিভাবে ইসলামিক বক্তৃতা দেওয়া হয়? ইসলামিক বক্তৃতা দেওয়ার নিয়ম গুলো অনেকে জানতে চায়। ইসলামিক শব্দের প্রয়োগে ইসলাম ধর্মের পৌরাণিক কাহিনী এবং ধর্মের বিধানগুলো অবশ্যই ব্যাখ্যা সহকারে সাধারণ জনগণের সামনে উপস্থাপন করতে হবে। বক্তৃতা শুরু হওয়ার আগেও কিছু নিয়ম কারণ রয়েছে। একজন বক্তার মুখভঙ্গি এবং আচার-আচরণ দাঁড়ায় জনগণকে মুগ্ধ করে ফেলতে হবে।
চলুন এবার আমরা জেনে নিই একজন সাধারণ মানুষ কিভাবে বক্তৃতা দিয়ে একজন প্রিয় বক্তা হয়ে উঠতে পারে।
এই মাত্র আপনাকে বক্তৃতা রাখার অনুরোধ করা হলো। আপনি মনে মনে আল্লাহর কাছে দোয়া করে নিন ও মৃদু হাসি দিয়ে মঞ্চের দিকে এগিয়ে আসুন। লক্ষ্য করে দেখবেন আপনার মুচকি হাসি ও প্রফুল্লতা শ্রোতা- দর্শকদের আনন্দিত করবে। আপনার বক্তব্যের দিকে অত্যধিক মনোনিবেশ করবে।
দাঁড়িয়েই কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে শ্রোতাদের অবস্থা দেখে অবস্থা ভেদে আপনার চেহারার রূপ পরিবর্তন হবে। পূর্বে সালাম বিনিময় না হয়ে থাকলে সকলকে লক্ষ্য করে সালাম করতে হবে। এভাবে ৪/৫ সেকেন্ডের মধ্যে শ্রোতা-দর্শকদের মানসিক সংযোগ স্থাপন করে সংক্ষিপ্ত পরিচয় দিয়ে (যদি পরিচয় জানা না থাকে) স্বাভাবিক ভাবে বক্তব্য শুরু করতে হবে। শুরুতেই চিৎকার করা যাবে না।কর্কশ কন্ঠস্বর পরিহার করে মিষ্টি মধুর আওয়াজে কথা বলতে হবে। ৫. কণ্ঠস্বরকে শ্রোতাদের উপযোগী করে বলতে কথা হবে।
ভাষার শুদ্ধতার প্রতি খেয়াল রাখতে হবে। সাধু ও চলিতের সংমিশ্রণ করা যাবে না। আঞ্চলিকতা পরিহার করতে হবে। শব্দ উচ্চারণ করতে হবে সঠিকভাবে। শব্দ চয়ন, বাক্য-বিনির্মাণ এবং উচ্চারণের উপরই আকষর্ণীয় উপস্থাপনের অনেক কিছু নির্ভর করে। বক্তব্য অবশ্যই স্পষ্ট ও সাবলীল হতে হবে। জড়তা পরিহার করতে হবে। নতুন বক্তা হলে ভয়ের কারণে বাম হাত শক্ত করে মুষ্টিবদ্ধ করে বক্তৃতা শুরু করলে সব ভীতি দূর হয়ে যাবে। গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টগুলো রিপিটৎকরতে হবে। সবাই শুনতে ভালোবাসে এইরকম টপিকগুলো বারবার করে রিপিট করতে হবে এবং তাদের ব্যাখ্যা সহ বিশ্লেষণ করে দিতে হবে জনগণের মাঝে।
যখনই কোন বক্তা বক্তৃতা দেবেন তখন সাধারণ কিছু বিষয়ের দিকে নজর রাখতে হবে। এবং ইসলাম ধর্ম সম্পর্কে যথার্থ জ্ঞান থাকতে হবে তেনার।ইসলাম ও শরীয়ত, এ দুটি ব্যাপারে যদি কেউ বক্তব্য দিতে চান, তিনি অবশ্যই জ্ঞানভিত্তিক বক্তব্য দেবেন। না জেনে আন্দাজে বক্তব্য দেবেন না। সুতরাং যিনি জানেন না, আন্দাজে বক্তব্য দিয়েছেন, তাঁর এ বক্তব্যটা আন্দাজে হওয়ার কারণে অবশ্যই ভুল হয়েছে এবং আন্দাজে বক্তব্য দেওয়াটা গুনাহ ও হারাম।
আল্লাহর নামে, রাসুলের নামে যে বিষয়ে তোমরা জান না, সে বিষয়ে কথা বলা মিথ্যা আরোপ করার শামিল। এখন সেই প্রসঙ্গ কাকতালীয়ভাবে বক্তব্য যদি সত্য হয়েও যায় বা কোনো কারণে যদি সত্য না হয় তাহলে কি হবে? যেহেতু আপনি না জেনে বলেছেন, না জেনে যেকোনো বক্তব্য দেওয়াটাই হারাম, কোনোভাবেই জায়েজ নেই।
ইসলাম ধর্মের প্রচার ঘটানোর জন্য যে সকল বক্তৃতার অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয় সেগুলো শুনতেও খুব ভালো লাগে। ইসলামিক এই অনুষ্ঠানগুলোর মধ্যমণি হলো একজন সফল বক্তা। বক্তা যদি ভালো করে বক্তৃতা না দেয় তাহলে বক্তৃতা কোনদিনই জমে উঠে না।আসসালামু আলাইকুম প্রিয় বন্ধুগণ। সুস্থ থাকবেন ,ভালো থাকবেন । আল্লাহ হাফেজ।