সাধারণত নিজের ঘর থেকে ৪০ কিলোমিটার দূরের উদ্দেশ্যে যদি কেউ যাত্রা পরিকল্পনা করে এবং জাতীয় দেশের রওনা হয় তখন থেকে তাকে মুসাফির হিসেবে ধরা হয়। জাত্রাপাতে চলাচলের সময় মুসাফিরদের নামাজের ক্ষেত্রে কিছু নির্দেশনা আমরা খুঁজে পাই এবং এখানে ব্যতিক্রমী কিছু নির্দেশনা অবশ্যই রয়েছে। সাধারণত মুসাফিরের এই নামাজের নাম কসরের নামাজ হিসেবে পরিচিত অর্থাৎ আগের দিনের যখন যানবাহনের কোন ব্যবস্থা ছিল না তখন এক জায়গা থেকে অন্য জায়গাতে যাবার জন্য মুসাফিরেরা যে যাত্রা পরিকল্পনা করতো সেই পরিকল্পনার অংশে রয়েছে নামাজ। এখানে নামাজ সংক্ষিপ্ত আকারে পড়ার একটি নির্দেশনা পাওয়া যায়।
যেহেতু এখানে ফরজ নামাজ নিয়ে কথা হচ্ছে এবং অন্যান্য নামাজ নিয়ে কথা হচ্ছে সেহেতু আমরা চেষ্টা করব শতভাগ সঠিক তথ্য না পাওয়া পর্যন্ত কোন ভুল তথ্য এখানে না লিখতে। আমরা উল্লেখ করার চেষ্টা করবো কোথা থেকে আমরা এই তথ্য পেয়েছি যাতে করে যারা পাঠকগণ রয়েছে তারা পরিষ্কারভাবে এর ধারণা পেয়ে থাকেন এবং খুব পরিষ্কারভাবে ধারণা পেলে কেবলমাত্র তারা বিশ্বাস করবে নতুবা কেউ এই কথা বিশ্বাস করবে না। ভ্রমণে থাকাকালীন সাধারণত নামাজ পড়াকে সংক্ষিপ্ত করা হয়েছে সেটা কিভাবে প্রমাণিত হয়েছে বা কোন দলিলের মাধ্যমে এটা মানা হয় চলুন আমরা সেটা জানব।
ভ্রমণের সময় নামাজ যেভাবে পড়বেন
আমরা আপনাদের পরিষ্কারভাবে আগেই জানিয়েছি মুসাফির অবস্থায় নামাজ পড়ার নিয়মকে মুসাফিরের নামাজ বলে। যদি মোটামুটি ৪৮ মাইল দূরে কেউ রাস্তা অতিক্রম করে এবং কোন একটি উদ্দেশ্যে যাওয়া শুরু করে তখন তাকে মুসাফির দ্বারা হয় । সাধারণত কিছু নির্দেশনা আছে যে নির্দেশনা অনুযায়ী বলা যায় যে মুসাফির ব্যক্তি যাত্রা পথে চার রাকাত বিশিষ্ট ফরজ নামাজ কে দুই রাকাত পড়তে পারবেন।
তবে এখানে আরো উল্লেখ করা হয় সেখানে শুধুমাত্র চার রাকাত বিশিষ্ট ফরজ নামাজ যেমন জোহর আসর ও এশার এই নামাজগুলোই সেই ব্যক্তি দুই রাকাত করে করতে পারবেন। এর বাইরের যে নামাজগুলো রয়েছে যেমন সুন্নত নামাজ বা নফল নামাজ এছাড়াও আরো ফরজ নামাজ সেই নামাজগুলো তাকে আসল নিয়ম মেনেই করতে হবে ।
যেহেতু এখানে ফরজ নামাজ এবং অন্যান্য নামাজের কথা উল্লেখ করা হয়েছে তাই আমরা অবশ্যই কছর করা বা কছর এর নামাজ সম্পর্কে একটু পরিষ্কারভাবে জানবো কোরআন ও হাদিসের আলোকে। এখানে কোরআনের একটি আয়াত আছে যে আয়াতের অর্থ আমরা এখানে তুলে ধরার চেষ্টা করবা আশা করছি সেই আয়াতের মাধ্যমে আপনারা বুঝতে পারবেন এই বিষয়ে বিস্তারিত।
“তোমরা যখন জমিনের সফর করো এবং তোমাদের আশঙ্কা হয় যে, কাফিরগান তোমাদেরকে বিপন্ন করবে, তখন সালাত কছর করলে তাতে তোমাদের কোন গুনাহ নেই। নিশ্চয়ই কাফেরগণ তোমাদের প্রকাশ্য দুশমন ।”
আমরা কোরআনের এই আয়াত থেকে পরিষ্কারভাবে এই বিষয়ে জানতে পারি এছাড়াও একটি হাদিস আছে যে হাদিসের আলোকে আমরা এ বিষয়ে আরো বিস্তারিত জানবো নিচের অংশের মাধ্যমে।
কসর নামাজ পড়ার নিয়ম
সাধারণত প্রথমেই বুখারী ও মুসলিম শরীফের একটি হাদিসের কথা উল্লেখ করতে হচ্ছে,
মোহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হজ, ওমরাহ ও যুদ্ধসহ যে কোন সফরে কছর নামাজ পড়তেন। ইবনে ওমর থেকে বর্ণিত “আমি মোহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সাথে ছিলাম, তিনি সফরে (চার রাকাত বিশিষ্ট নামাজ) দুই রাকাতের বেশি পড়তেন না। আবু বকর ও ওমর একই রকম নামাজ পড়তেন । “
এই হাদিস শরীফ থেকে আমরা পরিষ্কারভাবে এই বিষয়ে জানতে পারি তাই আশা করছি এখান থেকে আমরা একটু হলেও ভালো শিক্ষা পেলাম যেটা আমাদের জীবনে আমরা ব্যবহার করতে পারব। তবে অবশ্যই এই হাদিস এবং কোরআনের আয়াতের গভীরতা সম্পর্কে আমাদের জানতে হবে এবং এর বিস্তারিত ব্যাখ্যা সম্পর্কে আমাদের জানতে হবে তার কারণ হচ্ছে তখনকার পরিস্থিতি আর এখনকার পরিস্থিতি অর্থাৎ যাতায়াত ব্যবস্থার অনেক পরিবর্তন হয়েছে। তাই এই বিষয়ে বিস্তারিত জানার পরে আমাদের আমল করা উচিত।