যক্ষা রোগের ঔষধ কি

যক্ষা রোগ ছিল একসময় আতঙ্কের মত। অর্থাৎ যক্ষা হলেই নিশ্চিত মৃত্যুর এরকম একটা বিষয় ছিল। কিন্তু বর্তমানে যক্ষা রোগটি যে ভয়ঙ্কর একটি রোগ হিসেবে নেই। কারণ যক্ষা রোগের চিকিৎসা বের হয়েছে এবং বর্তমান সময়ে বাংলাদেশে বিনামূল্যে যক্ষা রোগের চিকিৎসা করা হচ্ছে। যার ফলে যক্ষা থেকে নিশ্চিত মুক্তি মেলানো সম্ভব হচ্ছে। কিন্তু আগে যক্ষা হলে রক্ষা থাকতো না। বলা হতো যক্ষা হলে রক্ষা নেই আর, বেঁচে থাকার কি উপায়। অর্থাৎ যক্ষা হলে ধরে নেওয়া হতো যে সেই ব্যক্তি আর বেশি দিন বাঁচবে না।

কিন্তু চিকিৎসা প্রযুক্তির উন্নয়নের ফলে বর্তমানে যক্ষার মতো জটিল এবং কঠিন রোগের চিকিৎসা সম্ভব হচ্ছে এবং চিকিৎসকের পরামর্শ মত চিকিৎসা নিলে যক্ষার হাত থেকে খুব সহজে বাঁচা যাচ্ছে। অনেকে দেখা যায় যক্ষা রোগের কি ধরনের চিকিৎসা প্রয়োজন, যক্ষা রোগের ঔষধ কি, কি ঔষধ খেলে যক্ষা রোগ থেকে সমাধান হবে, এই বিষয়গুলো সম্পর্কে জানতে চায়। আপনিও কি যক্ষা রোগের ঔষধ সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন? রক্ষা রোগ থেকে মুক্তির উপায় জানতে চাচ্ছেন? তাহলে আপনি এই আর্টিকেলটি পড়তে পারেন। আশা করি এখান থেকে আপনি এই বিষয়ে জেনে নিতে পারবেন।

টিউবারকিউলোসিস (টিবি) রোগের অন্যতম প্রধান কারণ হচ্ছে ব্যাকটেরিয়া, যার নাম মাইকোব্যাক্টেরিয়াম টিউবারকিউলোসিস। ব্যাকটেরিয়া সাধারণত ফুসফুসে আক্রমণ করে, কিন্তু টিবির ব্যাকটেরিয়া শুধু ফুসফুসে নয়, দেহের যেকোন অঙ্গেই আক্রমণ করতে পারে বা ছড়াতে পারে। যেমন: এই টিবির ব্যাকটেরিয়া আক্রমণ করতে পারে কিডনি, মেরুদন্ড ও মস্তিষ্কে। তবে যাদের দেহে টিবির ব্যাকটেরিয়া থাকে , তারা সবাই অসুস্থ হয়ে পড়ে না। যদি ঠিকমতো চিকিৎসা না করা হয়, তাহলে এই রোগের কারণে মৃত্যু হতে পারে। তবে যক্ষা রোগের যদি সঠিকভাবে চিকিৎসা করা হয় এবং যক্ষা শনাক্ত করা হয়, তাহলে এই রোগের হাত থেকে বাঁচা যাবে বা এই রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব হবে।

টিউবারকিউলোসিস কি?

ইংরেজি ভাষায় সাধারণত টিবিকে টিউবারকিউলোসিস বলে। এটি আসলে একটি সংক্রামক রোগ। এই রোগটি নিঃশ্বাসের মাধ্যমে একজনের থেকে অন্য জনের শরীরে ছড়িয়ে পড়তে পারে। এই রোগের বিভিন্ন ধরনের লক্ষণ দেখা যায়। সেগুলি এই আর্টিকেলটির মাধ্যমে খুব সহজে আপনি জেনে নিতে পারবেন। তবে এই রোগটি প্রধানত ছড়ায় একটি ব্যাকটেরিয়ার মাধ্যমে, যার নাম মাইকোব্যাকটেরিয়াম টিউবারকিউলোসিস। এই যক্ষা বা টিবি সারানোর অন্যতম একটি কারণ হচ্ছে বাতাস। হাসি- কাঁশি কিংবা লালার মাধ্যমে একজনের থেকে অন্য জনের দেহে এই রোগটি ছড়িয়ে যেতে পারে।

এই ব্যাকটেরিয়া আমাদের ফুসফুসের ক্ষতি করে। তবে এই রোগটি আমাদের দেহের সেই সব অংশের ক্ষতি করে যেখানে রক্ত ও অক্সিজেনের পরিমাণ বেশি। সেকারণেই টিবি বেশি হয় ফুসফুসে। ফুসফুসের টিবিকে আবার পালমোনারি টিবিও বলা হয়।

টিবির লক্ষণ:
একজন ব্যক্তির টিভি হলে নিম্নোক্ত লক্ষণগুলি দেখা দিতে পারে:
*কাশি হতে পারে এবং এই কাশি এক নাগাড়ে তিন সপ্তাহ বা তার বেশি সময় ধরে থাকবে।
*বুকে ব্যথা হতে পারে।
*শ্লেষ্মা
*দুর্বলতা কিংবা ক্লান্তি
*ওজন কমতে পারে
*খিদে কমে যেতে পারে
* ঠান্ডা লাগা ভাব থাকবে
*জ্বর
*রাতে ঘাম হতে পারে
একজন ব্যক্তির যক্ষা রোগ হলে সাধারণত এই লক্ষণ গুলি দেখা দিতে পারে। যদি কোন ব্যক্তির এই লক্ষণ গুলি দেখা দেয়, তাহলে যত দ্রুত সম্ভব চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে এবং চিকিৎসকের পরামর্শ মত ঔষধ সেবন করতে হবে। যক্ষা হলে আতঙ্কিত হওয়া যাবে না। যতটা সম্ভব শান্ত থাকার চেষ্টা করতে হবে এবং ঠিকমতো চিকিৎসা নিতে হবে। তাহলে যক্ষা ভালো হয়ে যাবে।

যদি কারো শরীরে এরকম কোন লক্ষণ দেখা দেয়, তাহলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। চিকিৎসক বিভিন্ন ধরনের পরামর্শ দিবেন। এক্ষেত্রে চিকিৎসক সাধারণত অ্যাটমস্ফিয়ার, আইসোনাইজড, পাইরোজেনমাইড এবং রিফ্যামপিন মিশ্রণের ঔষুধ দিয়ে থাকেন। এই ঔষধগুলো একটি নির্দিষ্ট কোর্স অনুযায়ী সেবন করতে হয়।

Leave a Comment