গবাদিপশু পালন সেই প্রাচীনকাল থেকেই হয়ে আসছে আমাদের এই পৃথিবীতে। অর্থাৎ ঐতিহাসিকদের মধ্যে দেখা যায় যে মানুষ যখন গুহাবাসী ছিলেন সেই গোহাভাষী মানুষেরা আস্তে আস্তে করে কৃষি কাজের দিকেই প্রথম মনোযোগী হয়। কারণ তারা যখন বনের মধ্যে অথবা পাহাড়ের গুহায় দলবদ্ধ হয়ে বাস করত তখন তাদের প্রত্যেকদিন খাবারের খোঁজে যেতে হতো। কিন্তু আস্তে আস্তে যখন জ্ঞানের পরিধি বাড়তে থাকে তখন বাইরে থেকে নিয়ে আসা ফলমূল খাওয়ার পর তারা যখন তাদের গুহার আশেপাশে সেই ব্রিজগুলো ফেলে রাখত তখন সেখান থেকে চারা গজিয়ে দেখা যেত যে ফলের ধরেছে বা ফল তারা সেখান থেকে পেয়ে যাচ্ছে। এভাবে আস্তে আস্তে তারা কৃষিকাজের দিকে আসতে থাকে।
তেমনি ভাবে দেখা যায় যে পশু শিকার করে নিয়ে সবচাইতে তারা স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করল যে এই সকল পশু তারা পোষ মানিয়ে নিজেদের গুহার আশেপাশে প্রতিপালন করার। এবং সেই পোষ মান া পশুদের মধ্যে অবশ্যই গরু প্রথমের দিকের পশু বলেই মনে করা হয়। সে তখন থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত গরুকে গৃহপালিত জীব হিসেবে দেখা হয়। এবং এই গরু এবং গাছে মানুষের সবচাইতে উপকারী প্রাণী এবং মানুষের বন্ধু। কারণ মানুষ বেঁচে থাকার জন্য প্রাথমিকভাবে মায়ের বুকের দুধ
পান করে। কিন্তু দেখা যায় যে মায়ের বুকের দুধ আসতে আসতে প্রায় দুই থেকে আড়াই দিন সময় পর্যন্ত লেগে যেতে পারে।এই সময়টা শিশুকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য বিশেষ করে গরুর দুধই প্রযোজ্য ছিল এবং এখন পর্যন্ত তা হয়ে আসছে। তাই দেখা যায় যে মায়ের দুধ পেটে যাওয়ার আগে গরুর দুধ মানব সন্তানের পেটে প্রবেশ করছে। এছাড় াও গরু যে দুধ দেয় সেই দুধ গরুর বাচ্চা খাওয়ার পর অতিরিক্ত দুধ মানুষের বেশ উপাদে এবং সুষম খাদ্য হিসেবে মানুষকে থাকে।
এছাড়াও গরু এতদিন পর্যন্ত অর্থাৎ ইউরোপের শিল্প বিপ্লবের প্রায় এক দেড়শ বছর পর পর্যন্ত পৃথিবীতে ব্যাপকভাবে প্রচলিত ছিল এই গৃহপালিত পশু গরুর দ্বারা কৃষি কাজ করার। কৃষি কাজের লাঙ্গল টানা থেকে শুরু করে অর্থাৎ বীজ বপন থেকে শুরু করে ফসল মাড়াই করা পর্যন্ত গরুর উপর নির্ভরশীল থাকতে হতো আমাদের। তাই দেখা যায় যে গরু সব দিক থেকেই আমাদের উপকার করে আসছে। তাই গোপালন সেই প্রাচীনকাল থেকেই দুধের জন্য কৃষি কাজে করার জন্য হয়ে আসছে।
একটা সময় ছিল যখন যার যত গাভী ছিল সে তত ধনবান বলে বিবেচিত হতো পৃথিবীতে। বর্তমান সময়ে অনেক গরুর খামার গড়ে উঠেছে আমাদের এই দেশে। তবে সব রকম গরু পালন করলে আসলে লাভের মুখ দেখা যায় না। তাই কিছু নির্দিষ্ট প্রজাতির এবং ভালো মানের উন্নত মানের গরু যদি পালন করা যায় তাহলে অবশ্যই সে লাভের মুখ দেখবে এবং তার সংসার সেই গরুর খামারের উপরে চলতে পারে। এখন আমরা দেখব যে ভালো জাতের গরু বা গাভী কোনগুলো যেগুলি পালন করে মানুষ লাভের মুখ দেখতে পারে।
কারণ যদি এই ধরনের উন্নত জাতের গাভী পালন মাংস উৎপাদনকারী গরু পালন করা না যায় তাহলে অবশ্যই খামারিরা তারা ক্ষতির সম্মুখীন হবে। তাহলে চলুন দেখে আসি যে কোন গরুগুলো পালন করলে খামারে বেশি লাভবান হওয়া যায়।উন্নত জাতের গরুর মধ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েকটি হচ্ছে -হলস্টেইন ফ্রিজিয়ান, জার্সি, শাহীওয়াল, সিন্ধি, ব্রাহমা ও থারপারকার প্রভৃতি। হলস্টেইন ফ্রিজিয়ান : শীতপ্রধান অঞ্চলের এ জাতের গরুর উৎপত্তিস্থল হল্যান্ডের ফ্রিজল্যান্ড প্রদেশে।
এরা দুধের জন্য বেশ বিখ্যাত। এই গরুগুলো যদি আপনি আপনার খামারে দুধ উৎপাদন করার জন্য এবং মাংস উৎপাদন করার জন্য পালন করে থাকেন তাহলে এখান থেকে বেশ ভালো পরিমাণের দুধ আপনি উৎপাদন করতে পারবেন এবং গরুগুলো বেশ ভালো দামেই আপনি বিক্রয় করতে পারবেন। তাই গরু পালন করে লাভ করতে হলে আপনাকে অবশ্যই এ ধরনের উন্নত জাতের গাভী গুলো পালন করতে হবে।