বর্তমান সময়ে কম-বেশি প্রত্যেকটি মানুষের আর্থিক অবস্থা অনেক ভালো হয়ে গিয়েছে। তবে আমরা যারা মুসলমান ধর্মের অনুসারী তারা যদি এই আর্থিক অবস্থার উপর নির্ভর করে যাকাত দেওয়ার নিয়ম চালু করে তাহলে দরিদ্রদের মধ্যে দিয়ে যে বৈষম্য রয়েছে সেগুলো আস্তে আস্তে দূরে চলে যাবে। তাই আপনার যদি নিশাব পরিমাণ সম্পদ থাকে তাহলে অবশ্যই আপনাকে যাতে প্রদান করতে হবে এবং এটা একটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত। যাকাত সম্পর্কে যেয়ে থাকলেও কত টাকা জমা থাকলে যাকাত দিতে হবে সে প্রসঙ্গে অনেকেই জানেন না বলে এটা ঠিকমতো আদায় করতে পারেন না।
তাই আপনাদের সুবিধার্থে আমরা এখানে কত টাকা জমা থাকলে অথবা আপনার কত টাকার সম্পত্তি থাকলে যাকাত দিতে পারবেন সে বিষয়গুলো জেনে নিতে পারলে খুব ভালো হবে। দৈনন্দিন জীবনে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ থেকে শুরু করে অন্যান যাবতীয় ইবাদতে নিজেকে শরিক করতে পারলেও হয়তো এই সকল বিষয়ে সঠিক ধারণা না থাকার কারণে ঠিকমতো বিষয়গুলো সম্পন্ন করা হয় না। তাই যখন যাকাত দেওয়া প্রসঙ্গে সঠিক তথ্য জানতে চাইবেন তখন অবশ্যই আমরা আপনাদেরকে বিষয়ে সঠিক তথ্য জানিয়ে দিলে সেটা আপনাদের জন্য অনেক ভালো হবে।
প্রত্যেকটি মুসলমানের জন্য পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ যেমন বাধ্যতামূলক করা হয়েছে তেমনিভাবে সামর্থ্যবান ব্যক্তিদের জন্য যাকাত প্রদান করা এবং হজ পালন করা প্রসঙ্গে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। হজ শারীরিক সামর্থের ওপরেও নির্ভর করে থাকি বলে আপনারা এটা আর্থিক ও শারীরিক বিষয়ের উপর নির্ভর করে করতে পারেন। তবে আপনার যদি আর্থিক সমর্থ্য থেকে থাকে তাহলে অবশ্যই ধরে দরিদ্রের যে বৈষম্য রয়েছে সেগুলো দূর করার জন্য অথবা দরিদ্রদের মধ্যে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেওয়ার জন্য এই যাকাত বছরের একটা নির্দিষ্ট সময় আপনাকে আদায় করতে হবে।
তবে আপনি যে যাকাতের অর্থ বের করছেন সেটা যে শুধু নিজের ইচ্ছামত ব্যক্তিদের প্রদান করবেন এমন ভাবে কোন সিস্টেম চালু নাই। অর্থাৎ যাকাত দেওয়ার ক্ষেত্রেও নির্দিষ্ট সংখ্যক ব্যক্তিদেরকে প্রদান করতে হবে এবং যারা সেই যাকাত নেওয়ার জন্য বিবেচিত তাদেরকে প্রদান করাটা সবচাইতে ভালো হবে। যেহেতু যাকাত ধনী দরিদ্রের বৈষম্য দূর করে এবং একজন আরেকজনকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেয় সেহেতু আপনার প্রদান করা যাকাত যেন সঠিক ব্যক্তির হাতে গিয়ে পড়ে সেটা আপনাকে নিশ্চিত করতে হবে।
তাই আপনারা যখন জানতে এসেছেন যে কতটুকু সম্পত্তি থাকলে অথবা কত টাকার সম্পদে থাকলে যাকাত দেওয়া যাবে তাদের উদ্দেশ্যে আমরা এখানে এ বিষয়গুলো উল্লেখ করছি। সোনা অথবা রুপার উপরে নির্ভর করে এই যাকাতের পরিমাণ নির্ধারণ করা হয়ে থাকে বলে আপনারা যদি শোনার হিসাব করতে চান তাহলে বর্তমান বাজারে আপনার যদি ছয় থেকে সাত লক্ষ টাকার সোনা থেকে থাকে অথবা সমপরিমাণ সম্পদ থেকে থাকে তাহলে আপনি যাকাত দেওয়ার জন্য একজন উপযুক্ত ব্যক্তি হিসেবে বিবেচিত হবেন।
আপনার এই যাকাত দেওয়ার বিষয়গুলো যদি শোনার পরিবর্তে ব্যাংক ব্যালেন্স হিসেবে থাকে অথবা অন্য কোন খাত থেকে আপনি ইনকাম করার ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারেন তাহলে সেটার মাধ্যমে আপনাকে যাকাত আদায় করতে হবে। আর যদি রুপার হিসেবে যান তাহলে আপনাদের মোটামুটি ভাবে ৫৮৫ গ্রাম রুপা থাকলে অর্থাৎ বর্তমান বাজার অনুযায়ী আপনাদের যদি আশি হাজার টাকার রুপা থাকে তাহলে সেটার উপরে নির্ভর করে আপনারা যতোটুকু সম্পদ রয়েছে তার উপরে যাকাত বের করতে পারেন।
তবে আমাদের সমাজের একটা খারাপ দিক রয়েছে যে যাকাত আদায় করতে হবে টাকা দিয়ে সেখানে আমরা যাকাত আদায় করি কাপড় দিয়ে অথবা অন্য কোন দ্রব্য দিয়ে। আবার ফিতরা আদায় করতে হবে পণ্য দিয়ে অথবা বিভিন্ন ধরনের খাদ্যদ্রব্য বস্তু দিয়ে সেখানে আমরা আদায় করি টাকা দিয়ে। তাই যেটার যে নিয়ম রয়েছে সে নিয়ম মেনে চলার চেষ্টা করবো এবং আল্লাহ পাকের দেখানো পথে যদি আমরা নিজেদের জীবনকে পরিচালনা করতে পারি তাহলে শৃঙ্খলিত জীবন ব্যবস্থা মেনে চলার পাশাপাশি সকল কাজ সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে পারব।