কৃমির ওষুধ খাওয়ার নিয়ম

প্রিয় বন্ধুগণ আজকে আমরা আপনাদের সাথে একটি গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা করব। শারীরিক রোগ সম্পর্কে মানুষের বিভিন্ন ধরনের ভুল ধারণা থাকে। এবং সামাজিক জীবনে মানুষ বিভিন্ন কুসংস্কারকে মানতে শুরু করেন। মানুষের লৌকো কথা এবং প্রচলিত কথার ভিত্তিতেও কিন্তু অনেক সময় আমরা বিভিন্ন রোগের চিকিৎসা করে থাকি যেগুলো কোন ভিত্তি নেই। আমাদের চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী সঠিক তথ্য জানা খুবই প্রয়োজন।

কারণ শরীর এবং স্বাস্থ্যের বিষয়ে সবসময় আমাদের সচেতন হতে হবে এবং ভুলভাল কোন তথ্য অনুযায়ী শরীরে ক্ষতি হতে পারে এরকম কোন পদক্ষেপ নেওয়া যাবে না। গ্রামের অশিক্ষিত জনগণরা অনেক সময় ভুলভাল তথ্য অনুযায়ী বিভিন্ন ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করে যার ফলে শরীরের অনেক ক্ষতি হয়। তাই শরীর এবং স্বাস্থ্য বিষয়ে ঝুঁকি নেওয়া যাবে না সব সময় সঠিক তথ্য জেনে কাজ করতে হবে।

কৃমি রোগের ট্যাবলেট টি মানুষ একবার খেলে আর খেতে চায় না। তারা হয়তো জানে না যে নির্দিষ্ট একটি সময় পরপর এই ট্যাবলেট পরিবারের সব সদস্য মিলে একসঙ্গে খেতে হয়। কারণ পরিবারের সকল সদস্য একসঙ্গে বসবাস করে তাই একজনের দেহে যদি থেকে যায় তাহলে কৃমির বংশবিস্তার করার সুযোগ থাকে। তাই পরিবারের সব সদস্য মিলে তিন মাস পর পর কৃমির ট্যাবলেট খাওয়া উচিত।প্রতি তিন মাস পরপর পরিবারের সবাই একটি করে অ্যালবেনডাজল বড়ি সেবন করতে পারেন। মেবেনডাজল হলে খেতে হবে পরপর তিন দিন। সাত দিন পর আরেকটা ডোজ খাওয়া যায়। শিশুদেরও একইভাবে সিরাপ খাওয়াতে হবে।

এখন বাংলাদেশ সরকার শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুলোতেও সব বাচ্চাদের একসঙ্গে কৃমির ঔষধ খাওয়ানোর পদক্ষেপ শুরু করেছে। এই প্রেমের ওষুধ টি একটি পোকা নাশক ঔষধ তাই সবসময় এই ঔষধ ভরা পেটে খেতে হবে খালি পেটে খেলে কিন্তু সমস্যা হতে পারে।প্রতি তিন মাস পরপর পরিবারের সবাই একটি করে অ্যালবেনডাজল বড়ি সেবন করতে পারেন। মেবেনডাজল হলে খেতে হবে পরপর তিন দিন। সাত দিন পর আরেকটা ডোজ খাওয়া যায়। শিশুদেরও একইভাবে সিরাপ খাওয়াতে হবে। দুই বছরের নিচে কোনো শিশুকে খাওয়াতে হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

আমাদের শারীরিক রোগ সম্পর্কে বিভিন্ন ধরনের ভুল ধারণা থেকে থাকে। অনেক ভুল তথ্য দ্বারা কিন্তু আমরা পরিচালিত হতে পারি।যেমন:-
চিনি খেলে বা মিষ্টি খেলে কৃমি হবে বলে যে ধারণা প্রচলিত, তা ঠিক নয়। মিষ্টি বা চিনি খাওয়ার সঙ্গে কৃমির কোনো সম্পর্ক নেই। বরং নোংরা হাতে বা অস্বাস্থ্যকর খাবার খেলে কৃমি হবে।কৃমি হলে পায়ুপথ চুলকায় বলে শিশুরা সেখানে হাত দেয়। পরে আবার সেই হাত মুখে দেয়। এভাবেই সংক্রমণ ছড়াতে থাকে। তবে পায়ুপথ চুলকানো মানেই কৃমি সংক্রমণ নাও হতে পারে। কৃমি সংক্রমণের আরও উপসর্গ আছে। যেমন: ওজন না বাড়া, পেট ফাঁপা, পেট কামড়ানো, আমাশয়, অপুষ্টি, রক্তশূন্যতা ইত্যাদি।

অনেকে আবার মনে করে গরমকালে অথবা অতিরিক্ত তাপমাত্রায় এই ঔষধ খাওয়া যাবেনা তাহলে শরীরের ক্ষতি হবে। গরমকালে কৃমিনাশক খাওয়া যাবে না—এমন ধারণারও কোনো ভিত্তি নেই। গরম, শীত, বর্ষা যেকোনো সময়ই কৃমিনাশক খাওয়া যাবে। তবে খাওয়ার পর বা ভরা পেটে খাওয়া ভালো।কৃমিনাশক নিরাপদ ওষুধ। এর তেমন কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই। তবে কারও কারও পেট ফাঁপা বা বমি ভাব হতে পারে। অনেক সময় কৃমিনাশক খেয়ে শিশুদের অসুস্থ হওয়ার যে খবর পাওয়া যায়, তা বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই অজ্ঞতা ও কুসংস্কারজনিত।

সুস্থ জীবন যাপন করলে কিন্তু কৃমি থেকে বাচার সম্ভব।পানি অবশ্যই ফুটিয়ে বা বিশুদ্ধ করে পান করবেন। শাকসবজি ও মাংস খাওয়ার আগে ভালো করে ধুয়ে নিতে হবে। খাবার প্রস্তুত ও পরিবেশনের আগে ভালো করে হাত ধুতে হবে। শিশুদের খাওয়ার আগে ও শৌচাগার ব্যবহারের পর সাবান দিয়ে কীভাবে ভালো করে হাত কচলে ধুতে হয়, তা শেখানো জরুরি।বাইরের খোলা অপরিচ্ছন্ন খাবার না খাওয়াই ভালো। মাঠঘাটে শিশুদের খালি পায়ে খেলতে দেবেন না। কেবল গ্রামে বা রাস্তায় থাকা শিশুদের কৃমি হয়—এই ধারণাও ভুল। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে যে-কারও কৃমি সংক্রমণ হতে পারে। তাই অপুষ্টি এড়াতে নিয়মিত কৃমিনাশক খাওয়াই ভালো।

Leave a Comment